এক দিনে দুই ব্যক্তির মস্তিষ্কে সফলভাবে চিপ স্থাপন করে নতুন মাইলফলক স্পর্শ করেছে ইলন মাস্কের নিউরোটেক প্রতিষ্ঠান ‘নিউরালিঙ্ক’। গত সোমবার প্রতিষ্ঠানটি জানায়, তারা একই দিনে দুটি ব্রেইন-ইমপ্লান্ট সফলভাবে সম্পন্ন করেছে এবং উভয় রোগীই ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন।
এ সাফল্যের পর নিউরালিঙ্কের সহপ্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্ক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লেখেন, “একদিন এই প্রযুক্তি কোটি মানুষের জীবন বদলে দেবে। কল্পনা করুন, যারা হাঁটতে পারছে না তারা আবার হাঁটছে, কিংবা ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত কেউ তাঁর সন্তানকে আবার চিনতে পারছেন।”
এর আগেও নিউরালিঙ্ক আলোচনায় আসে, যখন ২০২৪ সালের মার্চ মাসে প্রথমবারের মতো একজন পক্ষাঘাতগ্রস্ত ব্যক্তির মস্তিষ্কে চিপ স্থাপন করে প্রতিষ্ঠানটি। ৩০ বছর বয়সী সেই ব্যক্তি কাঁধের নিচ থেকে পুরোপুরি অক্ষম থাকলেও প্রতিস্থাপনের পর শুধু চিন্তার মাধ্যমে কম্পিউটার নিয়ন্ত্রণ এবং অনলাইন দাবা খেলতে সক্ষম হন। নিউরালিঙ্কের ভাষ্যে, এটি ছিল তাদের প্রযুক্তির প্রথম বাস্তব প্রয়োগ।
আরও পড়ুন
‘লিঙ্ক’ নামের এই যন্ত্রটি একটি ব্রেইন-কম্পিউটার ইন্টারফেস (BCI), যা ব্যবহারকারীর মস্তিষ্কের স্নায়ু সংকেত শনাক্ত করে সেগুলো বাইরের যন্ত্রে পাঠায়। কয়েন আকৃতির চিপটি খুলি বা স্কালের নিচে স্থাপন করা হয় এবং এতে থাকে এক হাজারের বেশি ইলেকট্রোডযুক্ত সূক্ষ্ম থ্রেড, যা মস্তিষ্কের কর্টেক্স অংশে বসানো হয়। এই ইলেকট্রোডগুলো সংগ্রহ করা সংকেত নিউরালিঙ্কের নিজস্ব প্রযুক্তির মাধ্যমে ব্লুটুথের মাধ্যমে বাইরে পাঠানো হয়। পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় অত্যন্ত দক্ষ এক রোবটের মাধ্যমে, যা প্রতিষ্ঠানটির দাবি অনুযায়ী মানুষের চেয়েও বেশি নিখুঁতভাবে সার্জারি করতে পারে।
প্রাথমিকভাবে নিউরালিঙ্ক প্রযুক্তিটি পক্ষাঘাতগ্রস্তদের সহায়তার লক্ষ্যে তৈরি করা হলেও ভবিষ্যতে এটি দৃষ্টিশক্তি হ্রাস, স্মৃতিভ্রান্তি, মানসিক অবসাদ, শ্রবণ সমস্যা এবং অন্যান্য জটিল স্নায়ুবিক রোগের চিকিৎসায় ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (FDA) ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অনুমোদন দিয়েছে, প্রতিষ্ঠানটি এখনও গবেষণার দীর্ঘমেয়াদি কার্যকারিতা ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেনি।