এক বছরেও চালু হয়নি নতুন কোনো শ্রমবাজার। সরকারি তৎপরতার অভাবে সিন্ডিকেটের বৃত্তে রিক্রুটিং এজেন্সি। এ অবস্থায় ব্যক্তিগত উদ্যোগে ভিসা সংগ্রহ করেও বিদেশে গিয়ে প্রতারিত হচ্ছেন, হাজারো বাংলাদেশি।
ধামরাইয়ের শাকিল শ্রমিক ভিসায় প্রথমবার যাচ্ছেন সৌদি আরব। দেশটিতে যেতে সাড়ে ৫ লাখ টাকায় চুক্তি করেছেন এক আত্মীয়ের সঙ্গে। কর্মী ভিসায় বিদেশ যাওয়ার পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে তিন দিনের প্রশিক্ষণে অংশ নিতে বাংলাদেশ-কোরিয়া কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে এসেছেন তরুণ। তবে এক পরিচিতের মাধ্যমে দুবাই গিয়ে প্রতারিত হলেও ফের বিদেশ যেতে চান শাকিল। তবে জানেন না নির্দিষ্ট কোনো কাজ।
শাকিল বলেন, সৌদিতে আমার আত্মীয় থাকে। তার কাছে কাজের সন্ধান আছে। কষ্টের কাজ এই যেমন-গাড়ির থেকে পণ্য লোড-আনলোড আবার বাসাবাড়িতে কাজ। কিন্তু এর আগে দুবাই গিয়েছিলাম। সেখানে আমাকে ১৩ দিন একটি রুমে আটকায় রাখা হয়েছিল। পরে সেখানে যারা আটকায় রেখেছিলো তাদের অনেক অনুরোধ করে নিজে টিকিটি কেটে যাওয়ার ২ মাস পর চলে আসি।
আরও পড়ুন
পরিবারে স্বচ্ছলতা ফেরানোর আশায় এমন বহু তরুণ প্রতিদিন দেশ ছাড়ছেন। তাদের বেশিরভাগই অদক্ষ কর্মী।
১ বছরেও নতুন শ্রমবাজার চালু না হওয়া এর অন্যতম কারণ। তাই সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত আর মালয়েশিয়াতেই ঘুরপাক খাচ্ছে শ্রমবাজার। প্রশ্ন হলো, নতুন শ্রমবাজারে কেন প্রবেশ করা যাচ্ছে না? এ জন্য সিন্ডিকেট, সরকারি সমন্বয়হীনতা আর বিদেশগামীদের অসচেতনতাকে দুষছেন রিক্রুটিং এজেন্টদের সংগঠন বায়রা।
সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রিয়াজ উল ইসলাম বলেন, বিদেশে যেতে আমাদের শ্রমিকদের আগ্রহ বেশি। কিন্তু শ্রমবাজারের কয়েক দেশে মাফিয়া ঢুকে এই ব্যবসাটিকে শেষ করে দিয়েছে।
অভিবাসন বিশ্লেষকরা বলছেন, নতুন শ্রমবাজার উন্মুক্ত করতে সরকারি তৎপরতা আর রিক্রুটিং এজেন্সির জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।
অভিবাসন বিশেষজ্ঞ আসিফ মুনির বলেন, যেসব দেশে আমাদের দেশের শ্রমিকরা যেতে পারে সেসব দেশের দূতাবাস এখানে খুলতে হবে। এটি রিক্রুটিং এজেন্টরাও এর আগে বলেছে। অভিবাসিরাও এটা বলে। এছাড়া যেসব দেশে শ্রমবাজার খোলা হবে সেখানে কি অবস্থা, কি ধরণের কাজ, কেমন দক্ষতা লাগবে এই মূল্যায়ন সরকারের পক্ষতে করা উচিত।
৯ মাসে কাজের খোঁজে দেশ ছেড়েছেন ৬ লাখ ৯৮ হাজার বাংলাদেশি। যাদের মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যে গেছেন ৫ লাখ আর মালয়েশিয়ায় পাড়ি দিয়েছেন প্রায় ১ লাখ কর্মী।