বড় হাসপাতাল করতে চায় চীন

বড় হাসপাতাল করতে চায় চীন

বাংলাদেশে স্বাস্থ্যখাতে একটি বড় ধরনের বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে চীন। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে ‘চায়না-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ জেনারেল হাসপাতাল’ নামে একটি অত্যাধুনিক হাসপাতাল নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। হাসপাতাল স্থাপনের জন্য ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং উত্তরবঙ্গে উপযুক্ত জমি খোঁজা হচ্ছে। ১৯ ফেব্রুয়ারি অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে স্বাস্থ্যখাতে চীনা সহায়তা নিয়ে অনুষ্ঠিত একটি বৈঠকের কার্যবিবরণী এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, হাসপাতাল নির্মাণ ছাড়াও স্বাস্থ্যখাতের অন্যান্য দিকেও বিনিয়োগ করবে চীন। এরই মধ্যে রোবোটিক ফিজিওথেরাপি সেন্টারের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম দেশে এসে পৌঁছেছে।

বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতে চীনের সহযোগিতা দীর্ঘদিনের। এদেশের ওষুধ শিল্প প্রায়শই তাদের প্রয়োজনীয় কাঁচামাল চীন থেকে আমদানি করে। এছাড়াও, মেডিকেল সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতির একটি বড় অংশও চীন থেকে আসে। প্রতি বছর বহু সংখ্যক বাংলাদেশী শিক্ষার্থী চীনে চিকিৎসা শিক্ষা গ্রহণ করতে যায়। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ চীনের কাছ থেকেই সবচেয়ে বেশি কোভিড-১৯ এর টিকা সংগ্রহ করেছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি উচ্চ পর্যায়ের সূত্র জানিয়েছে, বিশ্বসেরা বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে এই হাসপাতালটি নির্মিত হবে। এই হাসপাতালকে কেন্দ্র করে উত্তরবঙ্গে একটি অত্যাধুনিক চিকিৎসা হাব গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, চলতি মাসের মধ্যেই হাসপাতালটির জন্য স্থান নির্বাচন চূড়ান্ত করা সম্ভব হবে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রস্তাবিত জেনারেল হাসপাতালটি ঢাকা মহানগরীর মিরপুর, উত্তরা অথবা ধামরাই এলাকায় স্থাপিত হতে পারে। অন্যদিকে, টারশিয়ারি বিশেষায়িত হাসপাতালটি দিনাজপুর, রংপুর, নীলফামারী অথবা উত্তরবঙ্গের অন্য কোনো জেলায় নির্মাণের জন্য উপযুক্ত স্থান বিবেচনা করা হচ্ছে। এই হাসপাতালগুলোর জন্য প্রয়োজন হবে কমপক্ষে ১২ একর নিষ্কণ্টক জমি।

স্বাস্থ্যখাতে চীনের এই বিনিয়োগের আওতায় তিনটি প্রধান প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে একটি সাধারণ হাসপাতাল (জেনারেল হাসপাতাল), একটি বিশেষায়িত টারশিয়ারি হাসপাতাল এবং ১৯৭৫ সালের জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানে আহতদের পুনর্বাসনের জন্য একটি সেন্টার। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কয়েকজন কর্মকর্তা সম্প্রতি নীলফামারী জেলায় হাসপাতালের জন্য জমি পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের একজন সদস্য জানান, ৫০০ থেকে ৭০০ শয্যার হাসপাতালের জন্য একসঙ্গে ১২ একর জমি পাওয়া বেশ কঠিন। এছাড়াও, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সংস্কার ও আধুনিকায়নের জন্য চীন অর্থ সহায়তা প্রদান করবে এবং এ সংক্রান্ত প্রকল্প দলিল দ্রুত অনুমোদনের প্রক্রিয়া চলছে।

স্বাস্থ্য উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. নূরজাহান বেগম জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ও চীনের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে চীনা সরকার বাংলাদেশকে এক হাজার শয্যার একটি অত্যাধুনিক হাসপাতাল উপহার হিসেবে দিচ্ছে। প্রাথমিকভাবে এই হাসপাতালটি উত্তরবঙ্গের রংপুরে স্থাপনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এছাড়াও, চীনের বেসরকারি বিনিয়োগও বাংলাদেশে আসছে এবং খুব শীঘ্রই একটি উচ্চ পর্যায়ের চীনা প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করবে, যার মাধ্যমে এই বিষয়গুলো আরও স্পষ্ট হবে।

আরও দেখুন 

whatsappচ্যানেল ফলো করুন

প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন news@probashtime.com মেইলে।

Gif final ezgif.com optimize