সৌদি আরবের রিয়াদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বাংলাদেশ বিমানের এক কর্মীর বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ, যাত্রী হয়রানি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও মালামাল চুরির মতো একাধিক গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত ব্যক্তি জালাল উদ্দিন, যিনি বিমানের ড্রাইভার কাম ট্রাফিক অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কর্মরত। তার বিরুদ্ধে একাধিক প্রবাসী বাংলাদেশি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট দফতরে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন। বিষয়টি আমলে নিয়ে বিমান কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে একটি তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছে।
প্রবাসীদের ভাষ্য অনুযায়ী, জালাল উদ্দিনকে ঘিরে দীর্ঘদিন ধরে একটি দুর্নীতিপরায়ণ চক্র সক্রিয় রয়েছে, যা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সুনাম ক্ষুণ্ণ করছে। অভিযোগে বলা হয়, সাধারণ যাত্রীদের বোর্ডিং পাস পেতে তাকে ২ থেকে ৫ হাজার সৌদি রিয়াল পর্যন্ত ঘুষ দিতে হয়েছে, যা তিনি প্রকাশ্যেই আদায় করতেন।
সম্প্রতি এক নারী যাত্রীর কাছ থেকে তার বোর্ডিং কার্ড ও হ্যান্ডল্যাগেজ জোরপূর্বক নেওয়া হয় এবং ঘুষ না দিলে ফ্লাইটে উঠতে দেওয়া হবে না বলে হুমকি দেওয়া হয়। পরে ঘুষ দেওয়ার পর তিনি বিমানে উঠতে পারলেও দেশে ফিরে দেখতে পান, তার ব্যাগ থেকে দুটি নতুন মোবাইল ফোন চুরি হয়ে গেছে। এমন আরও অনেক ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন প্রবাসীরা।
আরও পড়ুন
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, নির্ধারিত দায়িত্বের বাইরে গিয়ে জালাল উদ্দিন কাউন্টার দখল করে বসতেন, যাত্রীদের ব্যাগ তল্লাশি করতেন এবং বোর্ডিং কার্ড আটকে রাখতেন। তাকে প্রায়ই বিমানবন্দরের গেট ও অন্যান্য সংরক্ষিত এলাকায় ঘোরাফেরা করতে দেখা যেত, যা স্পষ্টতই তার দায়িত্বের বাইরে। যাত্রীদের ‘বিমান মিস’ করিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে তিনি ঘুষ আদায় করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
বিমানের টিকিট বিক্রয় প্রতিষ্ঠান ও প্রবাসী সমাজের একাধিক প্রতিনিধি মনে করেন, জালাল উদ্দিন একা নন— তার পেছনে একটি প্রভাবশালী চক্র রয়েছে, যার সঙ্গে বিমানের কিছু অসাধু কর্মকর্তা জড়িত থাকতে পারেন। প্রবাসীরা পাঁচ দফা দাবিতে জালাল উদ্দিনকে চাকরিচ্যুত করা, উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন, ‘অভিযোগ গ্রহণ ও প্রতিকার কেন্দ্র’ স্থাপন, কর্মীদের দায়িত্ব নির্ধারণ এবং জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ বিমানের এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, তদন্তের নির্দেশনা পাওয়া গেছে এবং অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে অভিযুক্ত জালাল উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।