একসময় সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্য ছিলেন কাজী এমদাদুল ইসলাম। পরবর্তীতে সরকারি চাকরিতে যুক্ত হয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে তার বিরুদ্ধে বিতর্কের ঝড় উঠেছে। বিপুল সম্পদের মালিক হওয়া, বিতর্কিত নির্বাচন সংশ্লিষ্টতা এবং সর্বশেষ নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার ঘটনায় তাকে ঘিরে নানা প্রশ্ন উঠেছে।
সিলেটের জেলা প্রশাসক হিসেবে প্রায় চার বছর দায়িত্ব পালন করেন কাজী এমদাদ। সর্বশেষ তিনি সৌদি আরবের জেদ্দায় লেবার কাউন্সেলরের দায়িত্বে ছিলেন। তবে গত ৩০ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে কনস্যুলেট থেকে বিদায় নেওয়ার পর থেকে তার আর কোনো খোঁজ নেই। কাগজে-কলমে তিনি প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় হয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে যোগ দিয়েছেন বলে জানা গেলেও, বাস্তবে দেশের কোনো সীমান্ত পয়েন্টে তার প্রবেশের রেকর্ড পাওয়া যায়নি।
সরকারি বিভিন্ন দফতর—জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, এমনকি জেদ্দার বাংলাদেশ কনস্যুলেট—তাঁর বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে কোনো তথ্য দিতে পারেনি। তিনি চলতি বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি ৩৩ জন যুগ্ম সচিবের সঙ্গে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) হিসেবে বদলি হন।
আরও পড়ুন
উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, এই ওএসডি কর্মকর্তাদের অনেকেই ২০১৮ সালের বিতর্কিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। এমদাদুল ইসলামও ছিলেন সিলেট-ভিত্তিক রিটার্নিং কর্মকর্তা। ২০১৮ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনি সিলেটের জেলা প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করেন।
এর আগে, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে এমদাদুল ইসলামকে গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়া উপজেলায় ইউএনও হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এরপর ২০১৪ সালের নির্বাচনকালে তিনি ঢাকায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ছিলেন। ছাত্রলীগের সাবেক নেতা হিসেবে তার অতীত রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতাও রয়েছে। সাতক্ষীরার তালা উপজেলার বাসিন্দা এমদাদের অতিরিক্ত সম্পদ অর্জন ও বিত্ত-বৈভব নিয়ে স্থানীয় মহলে ব্যাপক প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।