চলতি বছর বিশ্বের ১৩০টিরও বেশি দেশ থেকে প্রায় ১৬ লাখ ৭৩ হাজার ২৩০ জন হাজি হজ পালনের জন্য সৌদি আরবে আগমন করেন। এত বিপুল সংখ্যক হাজির সেবা নিশ্চিত করতে দেশটির হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছিল এবং এটিকে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে প্রযুক্তিনির্ভর ও আন্তর্জাতিকভাবে সমন্বিত হজ হিসেবে ঘোষণা করেছে।
সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক সহযোগিতাবিষয়ক উপমন্ত্রী ড. আল-হাসান বিন ইয়াহইয়া আল-মানাখরা জানান, ২০২৫ সালের হজ আরও নিরাপদ, উন্নত এবং ভিড় ব্যবস্থাপনায় আরও কার্যকর করার লক্ষ্যে ইতিমধ্যে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি জানান, এ বছর সরকারি-বেসরকারি ও স্বেচ্ছাসেবী মিলিয়ে আড়াই লাখের বেশি জনবল নিয়োজিত ছিল হাজিদের সেবা নিশ্চিতে।
এ বছর হজ ব্যবস্থাপনায় বেশ কয়েকটি আধুনিক প্রযুক্তি যুক্ত করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে ডিজিটাল ইমিগ্রেশন চেক, এআই-চালিত ভিড় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, স্মার্ট ব্রেসলেট, ভয়েস-চালিত অনুবাদক, স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ ডিভাইস ও ড্রোনের মাধ্যমে জরুরি সহায়তা পাঠানো। এসব প্রযুক্তির মাধ্যমে হাজিদের যাত্রা আরও সহজ, নিরাপদ এবং সুচারুভাবে পরিচালিত হয়েছে বলে দাবি মন্ত্রণালয়ের।
আরও পড়ুন
আল-মানাখরা জানান, এবারের হজে “নো পারমিট, নো হজ” নীতিমালা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হয় এবং বহু ভাষায় প্রচার চালিয়ে হাজিদের সচেতন করা হয়েছে, যেন তারা নিশ্চিন্তে ইবাদতে মনোনিবেশ করতে পারেন। একইসঙ্গে হাজিদের গরমজনিত রোগ থেকে সুরক্ষা দিতে ফ্রন্টলাইন কর্মীদের প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে।
সৌদি সরকার এ বছর ৭৮টি দেশের সঙ্গে আগাম সমন্বয় করেছে এবং ১৩০টিরও বেশি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক সম্পন্ন করেছে। এতে অংশীদার দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়ে হজ ব্যবস্থাপনাকে আরও কার্যকর করার লক্ষ্যে কাজ করা হয়েছে। ‘মক্কা রুট’ কর্মসূচির আওতায় আটটি দেশের বিমানবন্দরে হাজিদের ভিসা, স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হয়েছে।
নুসুক ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে হাজিরা সেবার নতুন মাত্রা পেয়েছেন। এই অ্যাপ ও কার্ড ব্যবহার করে তারা অভিযোগ জানানোর পাশাপাশি ২৪ ঘণ্টা বহু ভাষায় সেবা গ্রহণ করেছেন। উপমন্ত্রী আরও বলেন, “আল্লাহর মেহমানদের স্বাগত জানাতে আমরা সারাবছরই প্রস্তুত। হজ ও ওমরাহ যাত্রা আরও সহজ করতে অংশীদার দেশগুলোর সঙ্গে আমাদের সমন্বয় অব্যাহত থাকবে।”