সৌদি আরবের আকাশসীমা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি সুরক্ষিত। দেশটি নিজেদের প্রযুক্তিতে ও নিজস্ব মাটিতে তৈরি করেছে ড্রোন প্রতিরোধী আধুনিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। এই গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি নির্মাণ করছে সৌদি সরকারের মালিকানাধীন সামরিক প্রতিষ্ঠান Saudi Arabian Military Industries -SAMI।
সৌদি নির্মিত নতুন ড্রোন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় রয়েছে অত্যাধুনিক কমান্ড ও কন্ট্রোল সেন্টার, যা পুরো প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের মস্তিষ্ক হিসেবে কাজ করে। রয়েছে শক্তিশালী জ্যামিং ডিভাইস, যা শত্রুকে ড্রোনের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। ব্যবস্থাটিতে রয়েছে উন্নত ৩ডি রাডার, যা আকাশে দূরের টার্গেট শনাক্ত করতে পারে, এবং প্যাসিভ রাডার, যা নিজে কোনো সংকেত না পাঠিয়েও শত্রু সিগন্যাল ধরতে পারে। এছাড়া ব্যবহৃত হয়েছে থার্মাল ও অপটিক্যাল সেন্সরসহ দূরপাল্লার নজরদারি ক্যামেরা, যা দিনরাত এবং প্রতিকূল আবহাওয়ায়ও নিরবচ্ছিন্ন কাজ করতে পারে।
আরও পড়ুন
সৌদি আরবের অস্ত্র উৎপাদন এখন আর কেবল আত্মনির্ভরতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। দেশটি ইতোমধ্যে কিছু প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি অন্যান্য দেশকে সরবরাহের পথে রয়েছে। আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশের সঙ্গে UAV ও হালকা অস্ত্র বিক্রির সম্ভাব্য সমঝোতা হয়েছে। এছাড়া তুরস্ক ও স্পেনের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে তৈরি অস্ত্র ভবিষ্যতে রপ্তানির পথ সুগম করছে। “World Defense Show”-এর মতো আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে সৌদি আরব এখন নিজস্ব পণ্য তুলে ধরছে, যা প্রতিরক্ষা শিল্পে তাদের আত্মবিশ্বাস ও অগ্রগতির প্রতীক।
২০১৭ সালে ক্রাউন প্রিন্স মুহাম্মদ বিন সালমানের নেতৃত্বে এবং “Saudi Vision 2030” উদ্যোগের অংশ হিসেবে SAMI প্রতিষ্ঠা পায়। এর মূল লক্ষ্য হচ্ছে—দেশীয় সামরিক সক্ষমতা গড়ে তোলা এবং অস্ত্র আমদানির ওপর নির্ভরতা কমিয়ে আনা। SAMI ইতোমধ্যে ট্যাংক, সাঁজোয়া যান, সামরিক ড্রোন (নজরদারি ও আক্রমণকারী), আধুনিক রাডার, ক্যামেরা সিস্টেম, পিস্তল, রাইফেল, গোলাবারুদ ও নৌবাহিনীর জন্য ছোট যুদ্ধজাহাজ তৈরি করছে। শুধু তাই নয়, প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বের নামকরা প্রতিরক্ষা কোম্পানির সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে।