ইসলামি বর্ষপঞ্জির মাসগুলো চাঁদ দেখার ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়। পবিত্র রমজান, ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহার মতো গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উৎসবগুলোও নতুন চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে পালিত হয়। এ সময় বিশ্বের কোটি কোটি মুসল্লি নতুন চাঁদের প্রতীক্ষায় থাকেন। নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) স্বয়ং চাঁদ দেখে রোজা ও ঈদ পালনের নির্দেশ দিয়েছেন— “তোমরা চাঁদ দেখে রোজা রেখো, চাঁদ দেখে ঈদ করো।”
তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সৌদি আরবের সরকার ইসলামি ঐতিহ্যবিরোধীভাবে চাঁদ দেখার পরিবর্তে জ্যোতির্বিদদের তৈরি পূর্বনির্ধারিত ক্যালেন্ডার ‘উম আল কুরা’-র ওপর নির্ভর করে রোজা ও ঈদের তারিখ ঘোষণা করছে। এ নিয়ে রমজানের সময়ই বিতর্ক দেখা দেয়, যখন কোনো দৃশ্যমান চাঁদ না থাকলেও সৌদি সরকার ২৯তম রোজায় ঈদুল ফিতর পালনের ঘোষণা দেয়। স্থানীয় কেউ চাঁদ দেখেননি—তথ্য-প্রমাণও উপস্থাপিত হয়নি।
চলতি বছরও সেই বিতর্ক ফের জেগে উঠেছে। সৌদির পূর্বঘোষিত ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, দেশটিতে ৬ জুন ঈদুল আজহা পালিত হবে এবং ৫ জুন হবে পবিত্র হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা ‘আরাফাতের দিন’। যদিও জিলহজ মাসের চাঁদ দেখার আনুষ্ঠানিক আহ্বান জানানো হয়েছে ২৭ মে সন্ধ্যায়—যা হবে জিলকদ মাসের ২৯তম দিন।
আরও পড়ুন
এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে—চাঁদ দেখার আগে কীভাবে তারা ঈদের নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করে ফেলছে? সাধারণ জনগণকে চাঁদ দেখতে বলা হলেও ক্যালেন্ডারে আগে থেকেই দেওয়া রয়েছে যে, ২৮ মে শুরু হবে জিলহজ মাস। ফলে এ বছরও ‘চাঁদ না দেখেই’ ঈদের ঘোষণা দেওয়ার আশঙ্কা জোরালো হচ্ছে।
চাঁদ দেখা সংক্রান্ত এ ধরনের বিতর্ক শুধু সৌদি আরবেই নয়, বিশ্বের অন্যান্য মুসলিম দেশেও বিভ্রান্তি তৈরি করে। অনেকেই চাইছেন, নবীর সুন্নাহ অনুসরণ করে চাঁদ দেখার প্রথাকে গুরুত্ব দেওয়া হোক এবং প্রযুক্তির পাশাপাশি প্রাকৃতিক পদ্ধতিও বজায় রাখা হোক।