সৌদি আরবের দাম্মাম শহরের একটি ফ্ল্যাট থেকে দুই বাংলাদেশি ভাইয়ের মরদেহ উদ্ধার করেছে স্থানীয় পুলিশ। নিহতরা হলেন কামরুজ্জামান কাকন (২৬) ও কামরুল ইসলাম সাগর (২২)। তারা উভয়েই সাভারের উত্তর ভুরুলিয়ার আদর্শপাড়ার বাসিন্দা এবং স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. মোশারফ হোসেন লম্বরির সন্তান।
নিহতদের পরিবারের বরাতে জানা গেছে, কাকন বাংলাদেশে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পন্ন করার পর বিদেশে চাকরির জন্য চেষ্টা করছিলেন। এ সময় ঢাকার নয়াপল্টনের সামিয়া ইন্টারন্যাশনালের পরিচালক বাহার উদ্দিন কাকনকে কানাডায় জব ভিসায় পাঠানোর প্রস্তাব দেন। চুক্তি অনুযায়ী টাকা নিলেও সে ভিসা নিশ্চিত করতে পারেননি। পরবর্তীতে বাহার উদ্দিন ছোট ভাই সাগরকে সৌদি আরবে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন, কিন্তু সেখানেও প্রতারণার শিকার হন তারা।
পরিবারের অভিযোগ, সাগরকে ভালো চাকরির আশ্বাস দিয়ে সৌদিতে পাঠানো হলেও, তাকে আটকে রেখে অতিরিক্ত টাকা দাবি করা হয় এবং শেষে তাকে খাবার ডেলিভারির কাজ করতে বাধ্য করা হয়। বড় ছেলে কাকনকেও একইভাবে সৌদিতে নেওয়া হয় এবং দুই ভাইকে একটি ছোট ঘরে আটকে রাখা হয়। তাদের প্রতি অমানবিক আচরণ করা হচ্ছিল বলে জানান পিতা মোশারফ হোসেন, যিনি ছেলেদের দেখতে ওমরা ভিসায় সৌদিতে গিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন
- দালালের খপ্পরে সৌদিতে নির্যাতিত ছেলে, ঋণের চাপে বিপাকে বাবা-মা
- মসজিদে নববীতে ২৪ ঘণ্টার হেল্পলাইন চালু
- সৌদি আরবে সিনেমা-গানের কার্যক্রম বাড়াতে নির্দেশনা
পরবর্তীতে দেশে ফিরে এসে মোশারফ হোসেন আরও জানান, বাহার উদ্দিন তাদের সঙ্গে প্রতারণা করে এবং তার পাঠানো স্বর্ণ বিমানবন্দরে কাগজপত্রের অভাবে আটকে যায়, যা নিয়ে বর্তমানে আইনি প্রক্রিয়া চলছে। এসব প্রতারণা ও মানসিক নির্যাতনের ফলেই এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হতে পারে বলে সন্দেহ করছে নিহতদের পরিবার।
তবে বাহার উদ্দিন তার সম্পৃক্ততা অস্বীকার করে পাল্টা অভিযোগ এনেছেন যে, মোশারফ হোসেন তার ১৩ লাখ টাকার স্বর্ণ আত্মসাৎ করেছেন। ইতিমধ্যে নিহত দুই ভাইয়ের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছে পরিবার।