ফিলিস্তিনের গুরুত্ব ইসলাম ও মুসলমানদের মাঝে অপরিসীম। কোরআন ও হাদিসে ফিলিস্তিনের বিশেষ মর্যাদা ও গুরুত্ব উল্লেখ করা হয়েছে, যা প্রতিটি মুসলমানের জানা উচিত।
কোরআনের বিভিন্ন স্থানে ফিলিস্তিন, বিশেষ করে বাইতুল মাকদিসের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা এই স্থানকে বরকতময় ভূমি হিসেবে অভিহিত করেছেন। যেমন, সুরা ইসরা’র প্রথম আয়াতে আল্লাহ বলেন,
পরম পবিত্র ও মহিমাময় সত্তা তিনি, যিনি স্বীয় বান্দাকে রাত্রি বেলায় ভ্রমণ করিয়েছিলেন মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা পর্যন্ত- যার চারপাশে আমি বরকত দান করেছি (সুরা ইসরা ১)
আরও পড়ুন
এছাড়াও, সুরা মায়েদার ১১ নম্বর আয়াতে ফিলিস্তিনকে ‘আরদ্বে মুকাদ্দাসা’ বা ‘পবিত্র ভূমি’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ফিলিস্তিনের পবিত্র ভূমিতে হযরত ঈসা (আ.), হযরত মরিয়ম (আ.), হযরত ইবরাহীম (আ.), এবং বহু নবী-রসুলের স্মৃতিবিজড়িত স্থান রয়েছে।
হাদিসের আলোকে ফিলিস্তিন
হাদিসেও ফিলিস্তিনের গুরুত্ব সুস্পষ্ট। নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইরশাদ করেছেন, ‘মাসজিদুল হারাম, মাসজিদে নববী, এবং মসজিদে আকসা ছাড়া অন্য কোনো মসজিদের উদ্দেশ্যে সফর করা বৈধ নয়। (সহিহ বুখারি, হাদিস ১১৮৯)
হযরত মায়মূনাহ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে নবী (সা.) উল্লেখ করেছেন যে, ফিলিস্তিন হচ্ছে হাশর ও কিয়ামতের স্থান। নবীজি বলেন,
এটি হাশরের মাঠ এবং একত্র হওয়ার ময়দান। সেখানে এক ওয়াক্ত সালাত (নামায) অন্যান্য স্থানের তুলনায় এক হাজার গুণ বেশি সওয়াবের। (ইবনে মাজাহ ১৪০৭)
কেন ফিলিস্তিন মুসলমানদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ?
১. আমাদের প্রথম কিবলা: মুসলমানদের প্রথম কিবলা ছিলো বাইতুল মাকদিস। ২. ইসরা ও মেরাজের স্থান: নবীজী (সা.) এখান থেকেই মেরাজে গমন করেন। ৩. তৃতীয় পবিত্র শহর: মক্কা ও মদিনার পর ফিলিস্তিনের আল কুদস হচ্ছে ইসলামের তৃতীয় পবিত্র শহর। ৪. নবীদের ভূমি: এখানে বহু নবী-রাসূলের আগমন, জন্ম, ও মৃত্যু হয়েছে। ৫. হাশর ও কিয়ামতের স্থান: হাদিসে বর্ণিত আছে যে, হাশর ও কিয়ামত এখানেই সংঘটিত হবে। ৬. জিহাদের ভূমি: নবী (সা.) বলেছেন, শেষ জামানায় বাইতুল মাকদিসের আশপাশে জিহাদ হবে এবং এই দল সর্বদা বিজয়ী থাকবে।
ফিলিস্তিনের ভূমি মুসলমানদের জন্য কেবল একটি ঐতিহাসিক বা রাজনৈতিক অঞ্চল নয়, বরং এটি ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ অংশ।