কোরবানির ঈদ ঘিরে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিক্রেতা নানা রকম অফার দিয়ে থাকেন। কেউ কেউ ফ্রিজ, টিভি বা অন্যান্য ইলেকট্রনিক পণ্য কিনলে উপহার হিসেবে গরু বা কোরবানিযোগ্য পশু দিয়ে থাকেন। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে—এই ধরনের অফারে পাওয়া পশু দিয়ে কোরবানি আদায় করা কি শরিয়তসম্মত?
ইসলামী আইন ও ফিকাহ বিশারদরা জানাচ্ছেন, অফারে পাওয়া পশু দিয়ে কোরবানি বৈধ হবে কি না, তা নির্ভর করে অফার গ্রহণ করার পদ্ধতির ওপর। অর্থাৎ, অফারটি ইসলামি দৃষ্টিকোণে বৈধ কি না—তা যাচাই করাটাই মূল বিষয়।
তাদের মতে, দুটি শর্ত পূরণ হলে এই ধরনের অফার গ্রহণ বৈধ হবে। প্রথমত, অফারের কারণে পণ্যের দাম বাড়ানো যাবে না। দ্বিতীয়ত, শুধুমাত্র পুরস্কার বা উপহার পাওয়ার আশায় পণ্য কেনা যাবে না। পণ্য কেনার উদ্দেশ্যটি হতে হবে বাস্তব ও প্রয়োজনভিত্তিক, পুরস্কারপ্রাপ্তি নয়।
আরও পড়ুন
ইসলামী বাণিজ্যনীতিতে পণ্যের মূল্য নির্ধারিত ও মানসম্মত হওয়া অপরিহার্য। ক্রেতাকে প্রলুব্ধ করতে লটারির মতো পন্থায় পুরস্কার দেওয়ার প্রচেষ্টা ইসলামী মূল্যবোধের পরিপন্থী এবং বাজার ব্যবস্থাকে অসাধু উপায়ে প্রভাবিত করে। মুসলমানদের এ ধরনের ফাঁদ থেকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
তবে উল্লেখিত শর্তগুলো মানা হলে এবং কোরবানির যোগ্য পশুটি উপহার বা অফারের মাধ্যমে বৈধভাবে মালিকানায় এলে তা দিয়ে কোরবানি দেওয়া জায়েজ হবে। ইসলামি শরিয়াহ অনুযায়ী, উপহার হিসেবে প্রাপ্ত পশু থেকেও কোরবানির বিধান পালন করা যেতে পারে।
হানাফি মাজহাবের বিখ্যাত ফিকহগ্রন্থ ‘বাদায়িউস সানায়ে’-তে বলা হয়েছে, কেউ যদি উপহারস্বরূপ একটি ছাগল পায় এবং তা দিয়ে কোরবানি করে, তবে কোরবানি বৈধ হবে। কারণ, উপহার পাওয়ার পর সেই ব্যক্তি পশুটির বৈধ মালিক হয়ে যান, যেমন কিনে নিলে মালিক হওয়া যায়। তবে শর্ত ভঙ্গ হলে ওই পশুর মালিকানাও বৈধ হবে না এবং তা দিয়ে কোরবানি করাও জায়েজ হবে না।