চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে ওমানে জালিয়াতি সংশ্লিষ্ট অপরাধের হার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। রয়্যাল ওমান পুলিশের ইনকোয়ারি ও ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জামাল বিন হাবিব আল কুরাইশি জানিয়েছেন, গত বছরের তুলনায় ২০২৫ সালের প্রথম তিন মাসে এই ধরনের অপরাধ ৩৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ও ই-কমার্স ব্যবহারের প্রবৃদ্ধি সাইবার প্রতারণাকে নিরাপত্তার বড় চ্যালেঞ্জে পরিণত করেছে।
তিনি জানান, প্রযুক্তিগত দুর্বলতা এবং ব্যবহারকারীদের অসচেতনতার সুযোগ নিয়ে প্রতারকরা নানা ধরনের কৌশল অবলম্বন করছে। এদের মধ্যে রয়েছে—সরকারি ওয়েবসাইটের আদলে ভুয়া সাইট তৈরি করে ব্যাংকিং তথ্য হাতিয়ে নেওয়া, ভুয়া চাকরির বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে অর্থ পাচার, আকর্ষণীয় অফারের প্রলোভন দেখিয়ে ফোনে ব্যক্তিগত তথ্য জেনে নেওয়া এবং পার্সেল ডেলিভারির ভুয়া মেসেজ পাঠিয়ে গ্রাহকের তথ্য চুরি।
ই-শপিংয়ের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় সামাজিক মাধ্যমে প্রতারণাও বাড়ছে। বিশেষ করে ইনস্টাগ্রামে ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলে গৃহকর্মী নিয়োগের নামে টাকা আদায়ের ঘটনা দেখা যাচ্ছে। পাশাপাশি, অনভিজ্ঞ বিনিয়োগকারীদের টার্গেট করে ডিজিটাল মুদ্রা লেনদেনের মাধ্যমে প্রতারণা করা হচ্ছে। এমনকি ভিডিও গেমের মাধ্যমে শিশুদের ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নিয়ে ব্ল্যাকমেইলের ঘটনাও ঘটছে বলে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন
জনসচেতনতা বৃদ্ধির ওপর জোর দিয়ে ব্রিগেডিয়ার আল কুরাইশি বলেন, জনগণকে অনলাইনে লেনদেনে সতর্ক থাকতে হবে। সন্দেহজনক লিঙ্ক এড়িয়ে চলা, ব্যক্তিগত তথ্য যাচাই না করে শেয়ার না করা, টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু রাখা এবং শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহারের পরামর্শ দেন তিনি। এছাড়া অনলাইন কেনাকাটার জন্য আলাদা সীমিত ব্যালেন্সযুক্ত কার্ড ব্যবহারের পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।
জালিয়াতির শিকার হলে দ্রুত ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে অ্যাকাউন্ট স্থগিত রাখা, নিকটস্থ থানায় অভিযোগ দায়ের করা এবং পুলিশের হটলাইন ৮০০৭৭৪৪৪-এ যোগাযোগ করার আহ্বান জানানো হয়েছে। প্রতারকের সঙ্গে সকল বার্তা ও তথ্য সংরক্ষণের কথাও বলা হয়েছে। রয়্যাল ওমান পুলিশ ইতোমধ্যে একটি আন্তর্জাতিক প্রতারণা চক্রকে আটক করেছে, যারা ওমানে প্রবেশ করে সাইবার অপরাধ পরিচালনার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। নিরাপত্তা রক্ষায় আরওপি আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে।