প্রতিবেশি দেশ, তবু ওমানে শান্তি আছে ইয়েমেনে নেই!

প্রতিবেশি দেশ, তবু ওমানে শান্তি আছে ইয়েমেনে নেই

ইয়েমেনজুড়ে মার্কিন বাহিনীর হামলায় অন্তত ৮০ জন নিহত হয়েছেন। দেশটির সশস্ত্র যোদ্ধা হুতি বিদ্রোহীরা জানিয়েছে, এটি ইয়েমেনে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বড় প্রাণঘাতী হামলা। অথচ ঠিক পাশের দেশ ওমানে বেশ শান্তিপূর্ণভাবেই অবস্থান করছে নাগরিক ও প্রবাসীরা। তাই প্রশ্ন আসে, পাশাপাশি হয়েও ইয়েমেন ও ওমানের এই ভিন্ন অবস্থা কেন। দেশ দুটির আয়তন প্রায় সমান। ভূ-প্রকৃতি, জলবায়ু, প্রাকৃতিক সম্পদ, ভাষা, ধর্ম, বর্ণ–প্রায় সবই এক। পাশাপাশি এই দেশ দুটির একটি পৃথিবীর দরিদ্রতম দেশ আর অপরটি বিশ্বের অন্যতম ধনী দেশ। সবকিছুই যেহেতু এক, তাই দুটো দেশই হয় দরিদ্র, না হয় ধনী হওয়ার কথা। কিন্তু সবকিছু এক হলেও দেশ দুটির নেতৃত্বে বিস্তর গরমিল।

ওমানের নেতৃত্বে ছিলেন সুলতান কাবুস বিন কাবুস। তাঁর প্রধান লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ছিল ওমানের জনগণের জীবনমানের উন্নয়ন আর সর্বোচ্চ নিরাপত্তা বিধান করা। তাঁর দীর্ঘ শাসনকালে তিনি ওমানি জনগণের একজন সুযোগ্য অভিভাবকের ভূমিকা পালন করে গিয়েছেন। কয়েক দশকে ওমানকে নিয়ে এসেছেন বিশ্বের অন্যতম ধনী দেশের তালিকায়। তেল সম্পদের সমস্ত অর্থ ব্যয় করা হয়েছে দেশের উন্নয়নে। দেশের সম্পদকে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পদ মনে করে বসেননি।

আর ইয়েমেন পৃথিবীর দরিদ্রতম দেশের একটি। ইয়েমেনের নেতৃত্বে ছিলেন আলী আব্দুল্লাহ সালেহ। যদিও ইয়েমেনের এই দুর্দশার পেছনে অনেকগুলো আন্তর্জাতিক চক্রের চালবাজি ছিল। দেশটাকে তারা ভাগ করে নিয়েছিল নিজেদের মধ্যে। এর মধ্যে রাশিয়া, আমেরিকা, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সক্রিয় ভূমিকা ছিল। ফলে এখানে গৃহযুদ্ধ থেকে শুরু করে সব রকম অশান্তি বিরাজ করছে। আলী আব্দুল্লাহ সালেহ ব্যক্তিগতভাবে ছিলেন অত্যন্ত অসৎ। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বিশেষজ্ঞ দল এক রিপোর্ট পেশ করে, যেখানে বলা হয়–আলি আব্দুল্লাহ সালেহ তাঁর ৩৩ বছরের ক্ষমতায় থাকার সময় অসৎ উপায়ে ৩২ থেকে ৬০ বিলিয়ন ডলার অর্জন করেন এবং তা বিভিন্ন দেশে পাচার করেন। তাই তেল সম্পদ থাকার পরও ইয়েমেনিরা হতদরিদ্র।

অপরদিকে ওমানের সুলতান কাবুস ছিলেন অত্যন্ত সৎ এবং তাঁর দূরদর্শী পররাষ্ট্রনীতি ওমানকে একটা স্থিতিশীল ধনী রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। ওমানের আইন‑শৃঙ্খলা এবং বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে সৌহার্দ্য-সম্প্রীতি দেশটাকে দেশি-বিদেশি সবার জন্য এক নিরাপদ শান্তিপূর্ণ স্থানে পরিণত করেছে। ওমানিরা জানে, সবার আগে ওরা ওমানি, এটা সবারই দেশ। এমনকি প্রবাসীরাও এখানে সম্পূর্ণ নিরাপদ বোধ করে। এই সবকিছুর পেছনে আছে সুলতান কাবুসের রাষ্ট্র গঠন ও পরিচালনায় দক্ষ, সৎ আর দূরদর্শী চিন্তা।

আরও দেখুন:

whatsappচ্যানেল ফলো করুন

প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন news@probashtime.com মেইলে।

Probashir city web post