টাকার নেশায় বুঁদ হয়ে থাকা এই ব্যক্তির নাম মুসা আহমেদ। ওমানে বছরের পর বছর অসংখ্য প্রবাসীকে ফাঁদে ফেলে নিঃস্ব করেছেন। হ্যালো ওমান নামে একটি ফেসবুক পেইজে হৃদয়গ্রাহী মিউজিকের মিশেলে মানবিক কাজের ভিডিও বানিয়ে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। তার প্রতারণার শিকার হয়ে পথে বসেছেন অসংখ্য ওমান প্রবাসী। গত কয়েক বছরে লোক দেখানো সামাজিক কাজের আড়ালে প্রতারণার এক বিশাল সাম্রাজ্য তৈরি করেছেন মুসা।
ওমানের বিনিয়োগ ভিসার নামে টাকা আত্মসাত ছাড়াও মুসার প্রতারণা কৌশলের মধ্যে আছে ওমান থেকে বিভিন্ন দেশের ভিসা দেওয়ার নামে ধোঁকাবাজি, ভুয়া এয়ার টিকিট, ওমানে লাইসেন্স বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলার নামে প্রতারণা, কাজ দেওয়া কিংবা ভিসার ব্লক খুলে দেওয়ার নামে টাকা আত্মসাৎ।
আরও পড়ুন
মুসা সবচেয়ে বেশি টাকা হাতিয়েছেন ইনভেস্টর ভিসা দেওয়ার আশ্বাসে, আবার কাউকে ঠকিয়েছেন হাতে ভুয়া টিকিট ধরিয়ে। তবে মিষ্টভাষী এই প্রতারক যে এতটা নির্দয় এবং বেপরোয়া তা লেনদেনের আগে টের পাননা কেউই।
গত কয়েকদিনে প্রতারক মুসার বিষয়ে প্রবাস টাইমের কাছে অভিযোগ করেছেন ডজনখানেক ভুক্তভোগী। যাদের একেকজন থেকে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে ৪০০ থেকে ১৯০০ রিয়াল পর্যন্ত। নাম না জানা আরও ভুক্তভোগীদের সংখ্যা যোগ করলে মুসা ওমানে আসার পর থেকে কয়েক কোটি টাকার প্রতারণা করেছেন।
এসকল অভিযোগের বিষয়ে মুসার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি আর্থিক অসঙ্গতির কথা স্বীকার করেন। তবে, এই পরিস্থিতির জন্য দায় চাপান ভুক্তভোগীদের উপরে।
মুসার ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারে মাস্কাটের বাংলাদেশ দূতাবাসের সাথে যোগাযোগ করে প্রবাস টাইম। এসময় ভুক্তভোগী শ্রমিকদের চাহিদা মোতাবেক প্রয়োজনীয় আইনি সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দূতাবাসও।
ব্যবসায়ী নন এমন প্রবাসীদেরকে টাকার বিনিময়ে ইনভেস্টর লাইসেন্স করে দিয়ে মুসা প্রতারণা করেছেন খোদ ওমান সরকারের সাথেও। অবশ্য এক সূত্রের মারফতে জানা গেছে, যেকোনো সময় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে দেশটির সরকার।
গতকাল মুসার প্রতারণা নিয়ে প্রবাস টাইমে সংবাদ প্রচারের পর ভুক্তভোগীদের আরও অনেকেই মুখ খুলেছেন তাকে নিয়ে। আর কমিউনিটি থেকে দাবি উঠেছে, ডালপালা ছড়িয়ে পড়ার আগেই মুসা ও তার মত প্রতারকদের বিষবৃক্ষ যেন এখনই সমূলে উৎপাটন করা হয়।