দেশের শ্রমবাজারে নতুন করে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ঐতিহ্যবাহী শ্রমবাজার ওমানের ভিসা বন্ধের দেড় বছর পেরিয়ে গেলেও পুনরায় চালুর কোনো লক্ষণ নেই।
অন্যদিকে, শীর্ষ গন্তব্য সৌদি আরবেও কর্মী যাওয়া কমে যাওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই অবস্থা চলতে থাকলে বাংলাদেশের শ্রমশক্তি রপ্তানি খাত বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৬ সালে বাংলাদেশ থেকে ওমানে কর্মী প্রেরণের সংখ্যা ছিল সর্বোচ্চ। সে বছর ১ লাখ ৮৮ হাজার ২৪৭ জন কর্মী ওমানে গিয়েছিলেন।
করোনা মহামারীর ধাক্কা কাটিয়ে উঠলেও, ২০২২ সাল থেকে ভিসা বন্ধের পূর্ব পর্যন্ত প্রায় ৩ লক্ষ কর্মী ওমানে পাড়ি জমিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন
কিন্তু ২০২৩ সালের অক্টোবরে ওমান আকস্মিকভাবে বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা বন্ধ করে দেয়, যা শ্রমবাজারের জন্য একটি বড় আঘাত ছিল।
দীর্ঘ সময় ধরে ওমানের ভিসা বন্ধ থাকার পাশাপাশি, সৌদি আরবের শ্রমবাজারেও সংকোচন দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশ দূতাবাসের বাধ্যতামূলক সত্যায়ন প্রক্রিয়া কঠোর করার পর সৌদি আরবে কর্মী যাওয়ার হার উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।
বিএমইটি’র সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ফেব্রুয়ারিতে সৌদিতে শ্রমশক্তি রপ্তানি জানুয়ারি মাসের তুলনায় ৪২ শতাংশ কমে গেছে। সামগ্রিকভাবে, দেশের শ্রমশক্তি রপ্তানি আগের মাসের চেয়ে ৩৬ শতাংশেরও বেশি হ্রাস পেয়েছে।
শ্রমিক নিয়োগকারী সংস্থাগুলো এই পরিস্থিতিকে বাংলাদেশের শ্রমবাজারের অতিরিক্ত সৌদি আরব নির্ভরতার ফল হিসেবে দেখছেন। তারা বলছেন, অন্যান্য শ্রমবাজারগুলোতে কর্মসংস্থানের সুযোগ সংকুচিত হয়ে যাওয়ায় সৌদি আরবের উপর এই মাত্রাতিরিক্ত নির্ভরতা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
এই পরিস্থিতিতে, শ্রমবাজার বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলছেন, বাংলাদেশ যদি অবিলম্বে ওমান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া এবং বাহরাইনের বন্ধ হয়ে যাওয়া শ্রমবাজারগুলো পুনরায় চালু করতে না পারে, তবে ভবিষ্যতে দেশের শ্রমশক্তি রপ্তানি খাত আরও কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে পারে। তারা সরকারের দ্রুত এসব শ্রমবাজার উন্মুক্ত করার জন্য কূটনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণের উপর গুরুত্বারোপ করেছেন।