জুলাই-আগস্ট গণহত্যার মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচার আগামী মাসের শুরুতেই শুরু হতে যাচ্ছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন তথ্য জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। রবিবার (২৭ এপ্রিল) আল জাজিরার বৈশ্বিক নেতাদের সাক্ষাৎকারভিত্তিক অনুষ্ঠান ‘টক টু আল–জাজিরা’য় ‘মুহাম্মদ ইউনূস: রিয়েল রিফর্ম অর জাস্ট আ নিউ রুলিং ক্লাস ইন বাংলাদেশ?’ শীর্ষক পর্বে এই সাক্ষাৎকার সম্প্রচার করা হয়।
আল জাজিরার ওয়েবসাইটে প্রকাশিত দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, জুলাই বিপ্লব, শেখ হাসিনার ভারত পালিয়ে যাওয়া এবং পূর্ববর্তী সরকারের দুর্নীতির নানা দিক নিয়ে কথা বলেন। শেখ হাসিনার বিচারের প্রসঙ্গে তিনি জানান, জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদনে তার বিরুদ্ধে অপরাধের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এর ভিত্তিতে ভারতের কাছে শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়া হয়েছে, যদিও এখনো ভারতের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক জবাব পাওয়া যায়নি।
সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস আগামী ডিসেম্বর থেকে পরবর্তী বছরের জুনের মধ্যে বাংলাদেশে একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও আদর্শ নির্বাচন আয়োজনের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। তিনি জানান, সংস্কারের কাজ দ্রুত এগোলে ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন হতে পারে; অন্যথায় আগামী বছরের জুন মাসের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন হবে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দলটি নিজে সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কি না। তবে শেষ পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের অবস্থানও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
আরও পড়ুন
এছাড়া সাক্ষাৎকারে উঠে আসে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে বিমসটেক সম্মেলনের সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ড. ইউনূসের বৈঠকের প্রসঙ্গ। ড. ইউনূস জানান, ওই বৈঠকে শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে অনুরোধ করেছিলেন তিনি, কিন্তু মোদি জানিয়েছিলেন, সামাজিক মাধ্যমে শেখ হাসিনার কর্মকাণ্ড তিনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না।
সাক্ষাৎকারের শেষ দিকে ড. ইউনূস বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিয়ে এখনো জনগণের প্রত্যাশা বেশ উচ্চ। তিনি মনে করেন, জনগণ এখনো মনে করে এই সরকারই তাদের জন্য স্থিতিশীলতা ও সুষ্ঠু সমাধান আনতে পারে।