মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিবেশী দেশ ইসরায়েল ও সিরিয়া টানা চার দিনের সংঘর্ষের পর যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছেছে। এতে প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ৩২১ জন। শুক্রবার (১৮ জুলাই) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বিষয়টি নিশ্চিত করেন তুরস্কে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত টম বারাক।
বারাক জানান, তুরস্ক, জর্ডান ও অন্যান্য আঞ্চলিক শক্তির আহ্বানে সাড়া দিয়ে দুই দেশ সংঘাত বন্ধে রাজি হয়েছে। তিনি বলেন, “আমাদের সব দ্রুজ, বেদুইন ও সুন্নি জনগোষ্ঠীর প্রতি আহ্বান, তারা যেন অস্ত্র পরিহার করে এবং সম্মিলিতভাবে একটি নতুন ও স্থিতিশীল সিরিয়ার পথ গড়ে তোলে।”
সংঘর্ষের সূচনা হয় গত মঙ্গলবার, যখন সিরিয়ার সোয়েইদা প্রদেশে একটি পারিবারিক অনুষ্ঠানে সশস্ত্র হামলায় অন্তত ১৩ জন নিহত হন। এই হামলায় অংশ নেয় হায়াত তাহরির আল শামস (এইচটিএস)-এর সদস্যরা, যারা কট্টরপন্থি সুন্নি এবং প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল শারার বিরোধী রাজনৈতিক জোটের অন্তর্ভুক্ত।
আরও পড়ুন
পরদিন ইসরায়েল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক এবং দক্ষিণাঞ্চলের সোয়েইদায় বিমান হামলা চালায়। ইসরায়েল দাবি করে, সিরিয়ায় সংখ্যালঘু দ্রুজ সম্প্রদায়ের ওপর হামলার প্রতিক্রিয়ায় তারা এই হামলা চালিয়েছে এবং ওই সম্প্রদায়ের সুরক্ষা নিশ্চিত করতেই তাদের এই পদক্ষেপ।
সোয়েইদায় চলমান সহিংসতায় পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করে। খাদ্য, পানি, বিদ্যুৎ ও যোগাযোগব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দা মুদার রয়টার্সকে জানান, “আমরা ভয়াবহ মানবিক সংকটে আছি। চার দিন ধরে এলাকায় কোনো রকমের খাবার, পানি বা বিদ্যুৎ নেই।”
দ্রুজ সম্প্রদায় মূলত শিয়া মতবাদের একটি শাখা হলেও তাদের রয়েছে স্বতন্ত্র ধর্মীয় পরিচয়। নবম শতকে ইসমাইল নাশতাকিন আদ-দারাজির প্রচারে এই ধর্মের উদ্ভব হয়। আহলে তাওহিদ নামেও পরিচিত এই সম্প্রদায়ের বিশ্বাস, এক স্রষ্টা আল্লাহ মানুষের মধ্যেই বিরাজমান।