মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা বাড়িয়ে, সিরিয়া ও লেবাননে একযোগে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) এই হামলাগুলো চালানো হয় সিরিয়ার সরকারি বাহিনী ও লেবাননের হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর অবস্থানে। ইসরায়েল জানায়, উত্তর সীমান্ত নিরাপদ রাখতে এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় সুয়েইদা প্রদেশে সম্প্রতি বেদুইন ও দ্রুজ মিলিশিয়াদের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ শুরু হয়, যার জেরে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকার সেখানে সেনা মোতায়েন করলেও, তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ায় উত্তেজনা আরও বাড়ে। এই প্রেক্ষাপটে ইসরায়েল হামলা চালায়, যা দেশটির প্রথম সরাসরি হামলা নতুন সিরীয় সরকারের বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন
প্রসঙ্গত, গত বছরের ডিসেম্বরে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে হটিয়ে ইসলামপন্থি বিদ্রোহীদের একটি জোট সিরিয়ায় নতুন সরকার গঠন করে। নতুন সরকারের শাসনব্যবস্থায় ইসরায়েলের সীমান্তবর্তী সুয়েইদা অঞ্চলের দ্রুজ সম্প্রদায় নিয়ে তেলআবিবের উদ্বেগ নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে। এই সম্প্রদায়ের সঙ্গে ইসরায়েলের ঐতিহাসিক যোগাযোগ থাকায়, অঞ্চলটিতে সহিংসতা বাড়লে তা ইসরায়েলকে উদ্বিগ্ন করে তোলে।
একইদিন ইসরায়েল লেবাননের বেকা উপত্যকায় হিজবুল্লাহর ঘাঁটি লক্ষ্য করেও বিমান হামলা চালায়। ইরান-সমর্থিত এই সশস্ত্র গোষ্ঠী দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েলের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচিত। লেবাননের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত নভেম্বরে স্বাক্ষরিত যুদ্ধবিরতির একটি শর্ত ছিল হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করা, যা এখন ইসরায়েলের ধারাবাহিক সামরিক চাপের ফলে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ এক বিবৃতিতে বলেন, “এই হামলা লেবানন সরকার ও হিজবুল্লাহ—দুজনের জন্যই একটি স্পষ্ট বার্তা। ইসরায়েল যেকোনো সামরিক শক্তি পুনর্গঠনের চেষ্টার বিরুদ্ধে কঠোর জবাব দেবে।” সব মিলিয়ে, সিরিয়া ও লেবাননে একযোগে এই হামলা ইঙ্গিত দিচ্ছে, মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক সংঘর্ষ আরও তীব্র হতে পারে। বর্তমান পরিস্থিতিতে কূটনৈতিক আলোচনার ভবিষ্যৎ নিয়েও দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।