পারস্য উপসাগরের হরমুজ প্রণালিতে সামরিক প্রস্তুতির অংশ হিসেবে সামুদ্রিক মাইন স্থাপন করেছে ইরানের সেনাবাহিনী। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার সূত্র অনুযায়ী, গত মাসে ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাবে এমন পদক্ষেপ নেয় ইরান। এ ঘটনার তথ্য প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে যুক্তরাষ্ট্র।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, গোপন গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষণ করে মার্কিন দুই কর্মকর্তা বিষয়টি শনাক্ত করেছেন। তাদের মতে, ১৩ জুন ইরানে ইসরায়েল হামলার পরপরই ইরান এই প্রস্তুতি নিতে শুরু করে। যদিও এখনো মাইনগুলো ব্যবহার করা হয়নি, তবে ইরানের এই পদক্ষেপ হরমুজ প্রণালি অবরোধের পরিকল্পনারই ইঙ্গিত দেয় বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিশ্বের মোট জ্বালানি তেল ও গ্যাস পরিবহনের প্রায় ২০ শতাংশ হরমুজ প্রণালির উপর নির্ভরশীল। এই পথ সাময়িকভাবে বন্ধ হলেও তা বৈশ্বিক জ্বালানি বাজারে বড় ধাক্কা আনতে পারত। তবে এখন পর্যন্ত মাইন ব্যবহার না করায় বাজারে আস্থার প্রতিফলন দেখা গেছে। ফলে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে অপরিশোধিত তেলের দাম ১০ শতাংশের বেশি কমেছে।
আরও পড়ুন
গত ২২ জুন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় ক্লাস্টার বোমা হামলা চালায়। এর পরপরই ইরানের পার্লামেন্ট হরমুজ প্রণালি বন্ধের পক্ষে মত দেয়। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার রয়েছে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের হাতে।
এই মুহূর্তে মাইনগুলো সরানো হয়েছে কিনা কিংবা কীভাবে এই তথ্য হাতে এসেছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত জানায়নি মার্কিন কর্তৃপক্ষ। তবে সাধারণত স্যাটেলাইট চিত্র কিংবা গুপ্তচর তথ্যের মাধ্যমে এ ধরনের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। হোয়াইট হাউস দাবি করেছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কৌশলী নেতৃত্বে পরিচালিত সামরিক অভিযানের ফলেই এখন হরমুজ প্রণালিতে নিরাপদে নৌ চলাচল নিশ্চিত হয়েছে এবং ইরান অনেকটা দুর্বল হয়ে পড়েছে।
পেন্টাগন ও জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানি মিশনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, সামরিক উত্তেজনার এ ধারা অব্যাহত থাকলে পারস্য উপসাগরে স্থিতিশীলতা মারাত্মকভাবে হুমকির মুখে পড়বে।