ইসরায়েলের সাম্প্রতিক এক হামলায় ইরানের একজন পরমাণু বিজ্ঞানী ও তাঁর পরিবারের ১১ সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন। ইরানি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন প্রেস টিভির বরাতে জানা যায়, সোমবার রাতে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার ঠিক আগমুহূর্তে ইরানের উত্তরাঞ্চলের আস্তানেহ আশরাফিহ শহরে এই হামলা চালানো হয়। নিহত বিজ্ঞানীর নাম সেদিঘি সাবের, যিনি পারমাণবিক গবেষণার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। হামলায় নারী ও শিশুসহ পরিবারের সব সদস্য মারা যান।
এই ঘটনায় ইসরায়েলি হামলার লক্ষ্য ও কৌশল নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। প্রেস টিভির দাবি অনুযায়ী, চলমান ১২ দিনের সংঘাতে ইসরায়েল এখন পর্যন্ত অন্তত ১৪ জন ইরানি পরমাণু বিজ্ঞানীকে নিশানা করেছে। নিহতদের মধ্যে রসায়নবিদ, পদার্থবিদ ও প্রকৌশলীও রয়েছেন।
এ বিষয়ে ফ্রান্সে নিযুক্ত ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত জোশুয়া জারকার বলেন, পরমাণু কর্মসূচির মূল ব্যক্তিদের হত্যা ইরানের সক্ষমতায় বড় ধরনের ধাক্কা দিয়েছে। তাঁর ভাষ্য অনুযায়ী, এসব বিজ্ঞানী ছাড়া ইরানের পারমাণবিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন এখন অনেকটাই কঠিন হয়ে পড়বে। তিনি আরও দাবি করেন, “এত বড় গবেষণা টিম না থাকায় ইরানের কর্মসূচি কয়েক বছর পিছিয়ে যাবে।”
আরও পড়ুন
তবে এই বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকেরা। তাদের মতে, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি এখন আর নির্দিষ্ট কয়েকজন বিজ্ঞানীর ওপর নির্ভরশীল নয়। দেশটিতে আরও দক্ষ ও প্রশিক্ষিত বিজ্ঞানী রয়েছেন, যারা প্রয়োজনে কাজ এগিয়ে নিতে সক্ষম। সেক্ষেত্রে হামলার প্রভাব সাময়িক হলেও দীর্ঘমেয়াদে তা কার্যক্রম থামাতে পারবে না।
বিশ্লেষকদের ধারণা, এসব লক্ষ্যবস্তু হামলা ইরানের পারমাণবিক পরিকল্পনায় সাময়িক বিঘ্ন ঘটালেও তেহরানের উচ্চাকাঙ্ক্ষায় খুব বেশি প্রভাব ফেলবে না। যুদ্ধবিরতির সময় এমন স্পষ্ট লক্ষ্যযুক্ত হামলা আন্তর্জাতিক মহলে ইসরায়েলের উদ্দেশ্য ও ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ নিয়ে নতুন করে উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে।