ইরাকের রাজধানী বাগদাদে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ হয়ে মোহাম্মদ আলী (২২) নামের এক বাংলাদেশি তরুণের মৃত্যু হয়েছে। গত ১৫ জুন রাতে এ দুর্ঘটনার পর স্থানীয়রা তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। চারদিন পর, মঙ্গলবার (১৮ জুন) পরিবারের সদস্যরা এ মৃত্যুসংবাদ জানতে পারেন।
মোহাম্মদ আলী ভোলার সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের চেউয়াখালি গ্রামের বাসিন্দা হাফেজ মো. সালেহ আহম্মেদের ছেলে। সংসারের অভাব দূর করতে মাত্র ১৫ বছর বয়সে সাত বছর আগে পাড়ি জমান ইরাকে। ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় বিদেশ যাত্রা হলেও, দেশে আর ফেরা হলো না তার।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, জেনারেটরের ইঞ্জিন চালু থাকা অবস্থায় তেলের পাইপ ফেটে পেট্রোল ছড়িয়ে পড়লে মোহাম্মদ আলীর গায়ে আগুন ধরে যায়। দ্রুত জেনারেটর বন্ধ করতে গিয়ে দগ্ধ হন তিনি। হাসপাতালে ভর্তি করলেও শেষরক্ষা হয়নি। শোকে স্তব্ধ তার পরিবার। কান্নায় বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন মা নাজমা বেগম, আর বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন বাবা সালেহ আহম্মেদ।
আরও পড়ুন
আলীর বড় বোন ইয়াছমিন বেগম বলেন, “অভাবের সংসারে বাবা-মায়ের মুখে হাসি ফোটাতে ছোটবেলায় বিদেশে পাড়ি জমিয়েছিল ভাই। গত বছর দেশে এসে বিয়ের কথা বললেও বাড়ির অবস্থা দেখে কিছুদিন অপেক্ষা করতে বলি। এরপর ভাইয়ের জন্য একটি নতুন দালান তৈরি করি। দুর্ভাগ্য—বিয়ের স্বপ্ন নিয়ে গড়া সেই দালানে আর ভাইয়ের ওঠা হলো না।”
বর্তমানে ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে ইরাকে বিমান চলাচল বন্ধ রয়েছে, ফলে আলীর মরদেহ দেশে আনার বিষয়টি অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। পরিবারটি মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছে। ভোলা জেলা প্রশাসক আজাদ জাহান জানিয়েছেন, বিষয়টি এখনো মন্ত্রণালয় থেকে তাদের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি; কোনো চিঠি পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।