২০১৮ সাল থেকে বাহরাইন নতুন ওয়ার্ক ভিজিট ও ফ্যামিলি ভিসা প্রদান বন্ধ রাখায় দেশটিতে বাংলাদেশি প্রবাসীর সংখ্যা উদ্বেগজনকভাবে কমে গেছে। একসময় যেখানে ৪ লাখের বেশি বাংলাদেশি ছিলেন, বর্তমানে সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে মাত্র দেড় লাখে। এই দীর্ঘ নিষেধাজ্ঞার কারণে সেখানে বসবাসরত বাংলাদেশি পরিবারগুলো এবং নতুন করে বাহরাইনে যেতে আগ্রহীরা চরম বিপাকে পড়েছেন। ভিসার দীর্ঘমেয়াদি অচলাবস্থার পাশাপাশি কোভিড-১৯ মহামারির সময় বাংলাদেশে আটকে পড়া অনেক প্রবাসীও আর বাহরাইনে ফিরতে পারেননি। এর ফলে বাহরাইনের নির্মাণ, হোটেল-রেস্টুরেন্ট, অটোমোবাইলসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ খাতে দক্ষ জনবলের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।
বাহরাইনে কর্মরত বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা বলছেন, নতুন কর্মী নিয়োগ দিতে না পারায় তাদের ব্যবসা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ফ্যামিলি ভিসা বন্ধ থাকায় অনেক প্রবাসী তাদের পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে যেতে পারছেন না, যা তাদের পারিবারিক জীবনে বড় ধরনের প্রভাব ফেলছে। একই সাথে, ভিজিট ভিসা বন্ধ থাকায় বিভিন্ন প্রয়োজনে বাহরাইন ভ্রমণে ইচ্ছুক ব্যক্তিরাও সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। স্থানীয় বাংলাদেশিরা আরও উল্লেখ করছেন যে, তারা শুধু দেশে রেমিটেন্সই পাঠাচ্ছেন না, বরং বাহরাইনের অর্থনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। তা সত্ত্বেও বছরের পর বছর ধরে চলা এই ভিসা নিষেধাজ্ঞার কারণে তারা এখন কর্মসংস্থান ও পারিবারিক উভয় ক্ষেত্রেই বড় ধরনের সংকটের মুখোমুখি।
এই গুরুতর পরিস্থিতির সমাধানে বাহরাইনে বসবাসরত বাংলাদেশিরা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। তারা মনে করছেন, ড. ইউনূসের আন্তর্জাতিক প্রভাব এবং কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে দ্রুত এই ভিসা সমস্যার সমাধান সম্ভব হবে, যা ঢাকা-মানামা সম্পর্ককেও আরও জোরদার করবে।
আরও পড়ুন
বাহরাইনের শ্রমবাজার বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রেমিটেন্স পাঠানোর দিক থেকে এটি বাংলাদেশের শীর্ষ দশটি দেশের অন্যতম। বাংলাদেশ দূতাবাসও আশাবাদী যে, ভিসা পুনরায় চালু হলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বাহরাইনের বিভিন্ন খাতে প্রায় ১ লাখ নতুন বাংলাদেশির কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। তাই এই গুরুত্বপূর্ণ শ্রমবাজারে বাংলাদেশিদের অংশগ্রহণ বাড়াতে এবং উভয় দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক সুদৃঢ় করতে দ্রুত ভিসা সমস্যার সমাধান এখন সময়ের দাবি।