মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম ধনী দেশ কুয়েতের অবকাঠামোগত উন্নয়নে বাংলাদেশি শ্রমিকদের অবদান উল্লেখযোগ্য হলেও, নানা ধরনের বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন তারা। অভিযোগ রয়েছে, চুক্তির মেয়াদ শেষে বা পারিবারিক প্রয়োজনে দেশে ছুটি নিতে চাইলে শ্রমিকদের ঘুষ দিতে হচ্ছে কুয়েতের বিভিন্ন কোম্পানিতে কর্মরত বাংলাদেশি সুপারভাইজার ও ম্যানেজারদের। ঘুষ না দিলে ছুটি মঞ্জুর করা হয় না, এমনকি পাসপোর্টও ফেরত দেওয়া হয় না।
শুক্রবার (১৪ জুন) কুয়েতের বাংলাদেশ দূতাবাসে আয়োজিত এক গণশুনানিতে এসব অভিযোগ তুলেন প্রবাসী সমাজকর্মী মহসিন পারভেজ। তিনি বলেন, ছয় বছর কাজ করার পর ছুটি নিতে গিয়ে এক প্রবাসীর কাছে ১০০ কুয়েতি দিনার ঘুষ চাওয়া হয়। অথচ দেশটির শ্রম আইন অনুযায়ী প্রতি বছর বা দুই বছর পর পর ছুটি দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। তবে অনেক কোম্পানিতে এই নিয়ম মানা হচ্ছে না। পছন্দের বা সুবিধা দেওয়ায় সক্ষম এমন শ্রমিকদের ছুটি দেওয়া হলেও, বাকিদের অবহেলা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন
দীর্ঘ সময় পরিবার থেকে দূরে থাকায় অনেক প্রবাসী হতাশা ও মানসিক অস্থিরতায় ভুগছেন। মোহাম্মদ হারুন নামের এক প্রবাসী জানান, পারিবারিক সমস্যার কারণে দেশে যেতে চাইলেও ছুটি না পেয়ে বাধ্য হয়ে ভিসা বাতিল করে দেশে ফিরে যেতে হয়। তিনি আরও জানান, দুই বছর আগে সাত লাখ টাকা খরচ করে কুয়েতে গিয়েছিলেন এবং মাসে মাত্র ৭৫ দিনার বেতন পেতেন।
বাংলাদেশ দূতাবাসের মিনিস্টার (শ্রম) আবুল হোসেন জানান, কুয়েতের শ্রম আইন অনুযায়ী শ্রমিকদের যথাযথ বেতন, আকামা নবায়ন এবং ছুটি পাওয়ার অধিকার রয়েছে। যদি এসব না দেওয়া হয়, তাহলে শ্রমিকরা লেবার কোর্টে আবেদন করে আইনি প্রতিকার চাইতে পারেন। তবে এখনও পর্যন্ত কেউ লিখিতভাবে অভিযোগ করেনি। তিনি বলেন, লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির মালিকদের সঙ্গে কথা বলবেন এবং শ্রমিকরা সঠিকভাবে প্রতিকার পাবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন।