ইসরায়েলের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার জবাবে ইরান পাল্টা আক্রমণ শুরু করেছে। শুক্রবার (১৩ জুন) রাত থেকে শনিবার ভোর পর্যন্ত ইরান ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে শত শত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায়। এতে এখন পর্যন্ত তিনজন নিহত ও অন্তত ৮০ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ।
বার্তা সংস্থা এপি ও টাইমস অব ইসরায়েলের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মধ্য ইসরায়েলের একাধিক এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হানে। এসব বিস্ফোরণে বহু ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ধ্বংসস্তুপের নিচ থেকে এক বেসামরিক নাগরিককে উদ্ধার করে আইডিএফ (ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী)। বিস্ফোরণের শব্দে তেল আবিব ও আশপাশের অঞ্চলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র জানান, বেশিরভাগ ক্ষেপণাস্ত্র আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দ্বারা প্রতিহত করা হয়েছে। তবে কিছু ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর এবং বাকিরা মাঝারি থেকে হালকা আঘাতে অথবা মানসিক চাপে পড়েছেন।
আরও পড়ুন
এ হামলার বিষয়ে ইরান দাবি করেছে, তারা একাধিক ধাপে শত শত ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছে। ইসরায়েলি বাহিনী হামলার সুনির্দিষ্ট সংখ্যা প্রকাশ না করলেও স্বীকার করেছে, রাতজুড়ে অন্তত চারটি বড় আকারের হামলা হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় সহায়তা করছে বলেও জানিয়েছে একটি মার্কিন প্রতিরক্ষা সূত্র।
এর আগে শুক্রবার ইসরায়েল ইরানের সামরিক ঘাঁটি ও পারমাণবিক গবেষণা কেন্দ্রে আঘাত হানে, যাতে ইরানের কয়েকজন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা ও পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হন। জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানি রাষ্ট্রদূত জানান, এসব হামলায় ইরানে ৭৮ জন নিহত ও ৩২০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।
ইসরায়েল দাবি করছে, তারা ইরানের সম্ভাব্য পারমাণবিক হুমকি প্রতিহত করতেই এই আগাম হামলা চালিয়েছে। তবে মার্কিন প্রশাসন ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকের মতে, ইরান এই হামলার আগে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কোনো সক্রিয় প্রচেষ্টা চালাচ্ছিল না। এই পরিস্থিতিতে ইরানের পাল্টা আক্রমণকে বিশ্লেষকরা অভূতপূর্ব ও গুরুতর নিরাপত্তা সংকট হিসেবে দেখছেন।