সংযুক্ত আরব আমিরাতে মানুষের সামাজিক ও মানসিক চাহিদার জবাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)-নির্ভরতা বাড়ছে। বন্ধুত্ব, পরামর্শ কিংবা প্রেম—সব ক্ষেত্রেই অনেক বাসিন্দা এখন ডিজিটাল সঙ্গীর দ্বারস্থ হচ্ছেন। প্রযুক্তিনির্ভর এই প্রবণতা দেশের সামাজিক কাঠামো ও সম্পর্কের ধরনেও প্রভাব ফেলছে বলে জানিয়েছে খালিজ টাইমস।
প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ওম্বোরি ও ফাইগ্রিডের প্রধান নির্বাহী আন্দ্রেয়াস হাসেল জানান, এআই সঙ্গীর জনপ্রিয়তা আসলে ডিজিটাল যুগে মানুষের আচরণগত পরিবর্তনেরই প্রতিফলন। আরব আমিরাতে প্রযুক্তিগত পরিকাঠামোর উন্নয়ন এবং স্মার্টফোন ব্যবহারের বিস্তার এই প্রবণতাকে আরও ত্বরান্বিত করেছে। তিনি জানান, কেবল পাঠ্যভিত্তিক নয়, বর্তমানে শব্দ ও চিত্রনির্ভর মাল্টিমোডাল এআই সঙ্গীর ব্যবহারে ব্যবহৃত হচ্ছে, বিশেষত তরুণ প্রজন্মের মধ্যে।
গবেষণা অনুযায়ী, বর্তমানে প্রতি চারজন প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে একজন কোনো না কোনোভাবে এআই চ্যাটবটের সঙ্গে ফ্লার্টমূলক কথোপকথনে যুক্ত হচ্ছেন। এই ধারা আরব আমিরাতেও দৃশ্যমান। ২০২৪ সালে দেশটির এআই সঙ্গী বাজারের মূল্য ছিল প্রায় ৭৩৪ মিলিয়ন ডলার এবং পূর্বাভাস অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে তা বেড়ে দাঁড়াতে পারে ৩.৬ বিলিয়ন ডলারে। বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকায় ইউএই শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে।
আরও পড়ুন
বোস্টন কনসাল্টিং গ্রুপের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউএই-এর ৯১ শতাংশ নাগরিক জেনারেটিভ এআই সম্পর্কে সচেতন এবং ৩৪ শতাংশ সক্রিয় ব্যবহারকারী। শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই হার আরও বেশি, যেখানে ৩২ শতাংশ নিয়মিত এ ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। এই পরিসংখ্যান ইঙ্গিত দেয়, ডিজিটালি দক্ষ তরুণ প্রজন্ম ব্যক্তিগত ও মানসিক জীবনেও প্রযুক্তিকে জায়গা দিতে প্রস্তুত।
বিশ্বজুড়েও এআই গার্লফ্রেন্ড অ্যাপ্লিকেশনগুলোর বাজার দ্রুত বাড়ছে। ২০২৪ সালে এর আকার ছিল প্রায় ২.৮ বিলিয়ন ডলার। আর্টস্মার্ট ডট এআই-এর পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৮ সালের মধ্যে এই বাজার ৯.৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। প্রযুক্তির সঙ্গে আবেগ ও সম্পর্কের এই সংমিশ্রণ নতুন যুগের সামাজিক বাস্তবতা তৈরি করছে।