সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে ইসরায়েল একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সরকার। বুধবার (৪ জুন) রাতে চালানো এই হামলায় একটি অস্ত্রভাণ্ডার লক্ষ্য করে ব্যাপক বিস্ফোরণ ঘটে, যার ফলে বহু প্রাণহানি ও বিপুল সম্পদ ধ্বংস হয়েছে বলে দাবি করেছে সিরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসির বরাতে এ তথ্য জানা গেছে।
দামেস্ক জানিয়েছে, এই হামলা দেশটির সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের স্পষ্ট উদাহরণ এবং এটি মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার প্রতি গুরুতর হুমকি তৈরি করেছে। সিরিয়ার অভিযোগ, ইসরায়েল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অঞ্চলটিকে অস্থির করে তুলতে চায়।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর দাবি, ওই হামলা ছিল আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ। কারণ, তার কয়েক ঘণ্টা আগে সিরিয়া থেকে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়, যা ইসরায়েলের খোলা জায়গায় পড়ে। কোনো হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও, এর জবাবে ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালায়। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেন, সিরিয়ার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা এই হামলার জন্য সরাসরি দায়ী।
আরও পড়ুন
২০২৪ সালের ডিসেম্বরে বিদ্রোহী বাহিনীর সহায়তায় বাশার আল-আসাদ সরকার অপসারিত হলে, অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় আসেন আল-শারা। তার শাসনামলে সিরিয়া-ইসরায়েল সীমান্ত উত্তেজনা আরও বেড়েছে বলে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা ‘সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস’ জানায়, বিমান হামলার পর কুনেইত্রা ও দারা অঞ্চলে প্রবল বিস্ফোরণ ঘটে। অঞ্চল দুটি ইসরায়েল অধিকৃত গোলান মালভূমির কাছাকাছি অবস্থিত, যা ১৯৭৬ সালে সিরিয়ার কাছ থেকে দখল করে নেয় ইসরায়েল।
এর আগে গত মাসেও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের প্রেসিডেনশিয়াল প্যালেসের কাছে হামলার নির্দেশ দেন। তিনি জানিয়েছিলেন, “দক্ষিণ দামেস্কে কোনো বাহিনী মোতায়েন হতে দেওয়া হবে না।” এ ঘটনার পর জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ইসরায়েলের এই পদক্ষেপকে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের শামিল বলে মন্তব্য করেছিলেন।