সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতনের পর এই প্রথমবার ইসরায়েলের ভূখণ্ডে রকেট হামলার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার সিরিয়া থেকে ইসরায়েল অধিকৃত গোলান মালভূমিতে দুটি রকেট ছোড়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। বার্তা সংস্থা এপি সূত্রে জানা যায়, হামলার পরপরই ইসরায়েল দারা প্রদেশের পশ্চিমাঞ্চলে পাল্টা গোলাবর্ষণ শুরু করে।
সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সানা জানায়, হামলার জবাবে ইসরায়েল দারা ও কুনাইত্রা অঞ্চলে বোমাবর্ষণ করে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় ওইসব এলাকায় প্রচণ্ড বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে, যার প্রভাব স্থানীয়ভাবে ভয়াবহ ছিল।
টেলিগ্রাম চ্যানেলে ‘মোহাম্মদ দেইফ ব্রিগেড’ নামের একটি গোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। এটি গাজায় নিহত হামাসের সামরিক নেতা মোহাম্মদ দেইফের নামে নামকরণ করা হয়েছে। যদিও গবেষকদের মতে, এই গোষ্ঠীর বাস্তব অস্তিত্ব এখনো নিশ্চিত নয় এবং এটি কেবল একটি টেলিগ্রাম চ্যানেল হিসেবেই চিহ্নিত রয়েছে।
আরও পড়ুন
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ এক বিবৃতিতে বলেন, ইসরায়েল এই হামলার জন্য সরাসরি সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারাকে দায়ী করছে। তিনি সতর্ক করে বলেন, হামলার জন্য “পূর্ণাঙ্গ প্রতিক্রিয়া” আসবে এবং তা “যত দ্রুত সম্ভব” বাস্তবায়িত হবে।
সিরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ঘটনার দায় অস্বীকার করে জানিয়েছে, তারা এখনো ইসরায়েলের দিকে হামলার ঘটনার সত্যতা যাচাই করেনি। এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “সিরিয়া কারো জন্য হুমকি নয় এবং হবে না।” পাশাপাশি ইসরায়েলের পাল্টা গোলাবর্ষণের তীব্র নিন্দা জানানো হয় এবং এতে “গুরুতর মানবিক ও বস্তুগত ক্ষয়ক্ষতি” হয়েছে বলে দাবি করা হয়।
উল্লেখ্য, বাশার আল-আসাদের পতনের পর গঠিত ইসলামপন্থী বিদ্রোহী নেতৃত্বাধীন সিরিয়া সরকার নিয়ে ইসরায়েল বরাবরই সন্দিহান। ইতোমধ্যে দেশটি সিরিয়ায় অসংখ্য বিমান হামলা চালিয়েছে। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার শর্তে আল-শারার সরকারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক উষ্ণ করেছে এবং কিছু নিষেধাজ্ঞাও প্রত্যাহার করেছে। আল-শারা সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, তিনি ১৯৭৪ সালের যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে ফিরে যেতে চান, তবে তাৎক্ষণিক স্বাভাবিকীকরণের কোনো উদ্যোগ নিচ্ছেন না।