দখলদার ইসরায়েলের বাধার মুখে ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছেন সৌদি আরবসহ ছয়টি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। রোববার পশ্চিম তীরের রামাল্লায় ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে বৈঠকের জন্য সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, তুরস্ক, মিসর ও জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সফরের পরিকল্পনা ছিল। আরব লিগের মহাসচিবও এ সফরের অংশ হিসেবে থাকার কথা ছিল।
জর্ডানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শনিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইসরায়েলের প্রতিবন্ধকতার কারণে এই বহুপক্ষীয় বৈঠকটি বাতিল করতে হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের মতে, অধিকৃত পশ্চিম তীরের আকাশসীমা ব্যবহার করতে না দেওয়ায় মন্ত্রীদের রামাল্লায় পৌঁছানো সম্ভব হয়নি।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ইসরায়েলের এই আচরণ তাদের দখলদারিত্ব ও ঔদ্ধত্যের বহিঃপ্রকাশ। শুক্রবার রাতে ইসরায়েল স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, তারা আরব মন্ত্রীদের এই সফরে কোনো ধরনের সহায়তা করবে না। পশ্চিম তীরের স্থল ও আকাশপথের নিয়ন্ত্রণ থাকায় ইসরায়েলের অনুমতি ছাড়া সেখানে বিদেশিদের প্রবেশ বাস্তবে অসম্ভব।
আরও পড়ুন
ইসরায়েলের এক সরকারি কর্মকর্তা মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে বলেন, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ এক ‘উসকানিমূলক বৈঠকের’ আয়োজন করতে যাচ্ছিল। এমন কোনো পদক্ষেপে তারা সহযোগিতা করবে না, যা ইসরায়েলের নিরাপত্তা প্রশ্নে হুমকি তৈরি করতে পারে। তবে ওই কর্মকর্তা যে ‘চুক্তি লঙ্ঘনের’ কথা বলেছেন, তা স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করেননি।
টাইমস অব ইসরায়েলের এক সূত্র জানিয়েছে, সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান যদি রোববার রামাল্লায় পৌঁছাতেন, তবে ১৯৬৭ সালের পর এটি হতো পশ্চিম তীরে সৌদির কোনো পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রথম সফর। কিন্তু ইসরায়েলের নিষেধাজ্ঞার কারণে আরব দেশগুলোর মন্ত্রীদের জর্ডান থেকে হেলিকপ্টারে রওনা দেওয়ার পরিকল্পনাও বাতিল হয়।
এমন সময়ে এই কূটনৈতিক তৎপরতা ব্যাহত হলো, যখন ইসরায়েল সম্প্রতি পশ্চিম তীরে নতুন করে ২২টি বসতির অনুমোদন দিয়েছে। জাতিসংঘ এসব বসতিকে অবৈধ ঘোষণা করে আসছে এবং এগুলোকেই ইসরাইল-ফিলিস্তিন শান্তি প্রক্রিয়ার বড় বাধা হিসেবে চিহ্নিত করছে। এ প্রেক্ষাপটে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাৎজ মন্তব্য করেছেন, পশ্চিম তীরে ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কাজ চলবে, আর যারা ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিচ্ছে—তাদের বক্তব্য ইতিহাসের পাতায় স্থান পাবে না।