ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস কর্তৃক গাজায় ৩০ হাজার নতুন যোদ্ধা নিয়োগের খবরটি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। সৌদি আরবের সংবাদমাধ্যম আল আরাবিয়ার বরাত দিয়ে টাইমস অব ইসরায়েলের এই প্রতিবেদনটি হামাসের সামরিক সক্ষমতা এবং চলমান সংঘাতের গতিপ্রকৃতি নিয়ে নতুন করে আলোচনা সৃষ্টি করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই নতুন যোদ্ধাদের হামাসের সামরিক শাখা ইজ আদ-দিন আল-কাসেম ব্রিগেডে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এবং তারা গোপন সামরিক ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ নিয়েছে। তবে আল আরাবিয়ার দাবি অনুযায়ী, তাদের দক্ষতা মূলত শহুরে যুদ্ধ, রকেট নিক্ষেপ এবং বিস্ফোরক স্থাপনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। এই তথ্যটি যদি সত্যি হয়, তবে এটি হামাসের কৌশলগত দিক এবং ভবিষ্যতের সামরিক অভিযোজনার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হতে পারে।
নিয়োগের সময়কাল স্পষ্টভাবে উল্লেখ না করা হলেও, ধারণা করা হচ্ছে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সাথে সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকেই এই যোদ্ধাদের দলে ভেড়ানো হয়েছে। দেড় বছরের বেশি সময় ধরে চলা এই যুদ্ধে ইসরায়েলি বাহিনী গাজার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করছে এবং তাদের জিম্মিদের মুক্ত করার অভিযানে লিপ্ত রয়েছে। তবে, এত দীর্ঘ এবং ব্যাপক সামরিক অভিযান সত্ত্বেও ইসরায়েল এখনো পর্যন্ত গাজার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেনি এবং জিম্মিদেরও উদ্ধার করতে সক্ষম হয়নি, যা তাদের সামরিক কৌশলের সীমাবদ্ধতাকেই তুলে ধরে।
আরও পড়ুন
অন্যদিকে, ইসরায়েলি বাহিনী সম্প্রতি গাজা-ইসরায়েল সীমান্তবর্তী অঞ্চলের একটি বড় অংশ দখল করে সেখানে ‘বাফার জোন’ তৈরি করেছে। এর ফলে গাজার প্রায় অর্ধেক অংশ এখন ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে, এবং সেখানকার ঘরবাড়ি ধ্বংস করে সাধারণ ফিলিস্তিনিদের প্রবেশে বাধা দেওয়া হচ্ছে। এই পদক্ষেপ একদিকে যেমন ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণ বাড়ানোর চেষ্টা, তেমনই অন্যদিকে গাজার জনগণের জন্য একটি বিশাল মানবিক সংকট তৈরি করেছে।
হামাসের এই বিশাল সংখ্যক নতুন যোদ্ধা নিয়োগ গাজার সংঘাতের ভবিষ্যৎ গতিপথ নির্ধারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। যদি এই যোদ্ধারা কার্যকরভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সক্ষম হয়, তবে ইসরায়েলের জন্য গাজার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়া আরও কঠিন হয়ে পড়বে। তবে, তাদের প্রশিক্ষণের স্তর এবং প্রকৃত যুদ্ধক্ষেত্রে তাদের কার্যকারিতা কতটা, তা সময়ই বলে দেবে। এই নিয়োগ একদিকে যেমন হামাসের শক্তি প্রদর্শন, তেমনই অন্যদিকে দীর্ঘমেয়াদী সংঘাতের জন্য তাদের প্রস্তুতির ইঙ্গিতও বহন করে।
আরও দেখুন