বিনা খরচে মালদ্বীপ থেকে দেশে এলো প্রবাসীর মরদেহ

বিনা খরচে মালদ্বীপ থেকে দেশে গেলো প্রবাসীর মরদেহ

হাসপাতাল ও মর্গের সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন শেষে সরকারি খরচ ও ফ্রী বিমান ভাড়ায় মালদ্বীপ থেকে দেশে পাঠানো হয়েছে প্রবাসী বাংলাদেশি সাব্বির মিয়ার মরদেহ। রবিবার (২, মার্চ) স্থানীয় সময় দুপুর দেড়টায় বাংলাদেশের বেসরকারি বিমান সংস্থা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে তার মরদেহ দেশে পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশ মিশনের কল্যাণ সহকারী মো. জসিম উদ্দিন।

সম্প্রতি মালদ্বীপে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মৃত্যুর মিছিল যেন দিন দিন বেড়েই চলেছে, যার বেশিরভাগই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে। এমনই একজন প্রবাসী বাংলাদেশি সাব্বির মিয়া (৪০) বিগত চারদিন যাবত চিকিৎসারত অবস্থায় (২০, ফেব্রুয়ারি) মালদ্বীপের ইন্দিরা গান্ধী মেমোরিয়াল হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার, বাঞ্ছারামপুর উপজেলার সোনারামপুর গ্রামের মরহুম তারো মিয়ার ছেলে।

বাংলাদেশ হাইকমিশন সূত্রে জানা যায়, সাব্বির মিয়ার মরদেহ ১০দিন ধরে স্থানীয় হাসপাতালের মর্গে রক্ষিত ছিল। মালদ্বীপের আইন অনুযায়ী কোনো বৈধ প্রবাসী কর্মকালীন অবস্থায় মারা গেলে বা অসুস্থ অথবা আহত হলে যথাযথ ইনস্যুরেন্সের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কোম্পানি কর্তৃক চিকিৎসাসহ প্রয়োজনে মরদেহ দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। তবে এক্ষেত্রে সাব্বির মিয়া মৃত্যুর সময় বৈধভাবে মালদ্বীপে অবস্থান করছিলেন না। ফলে তার মরদেহ দেশে পাঠাতে কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যথাযথভাবে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এছাড়াও সাব্বির মিয়া মারা যাওয়ার আগে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন, সম্পুর্ন বিল বকেয়া ছিলো। বিশেষ করে মরদেহ পাঠানোর আগে এই অর্থ পরিশোধের বাধ্যবাধকতা আছে। পরবর্তীতে দূতাবাসের চাহিদার প্রেক্ষিতে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রেরিত বরাদ্দের অর্থে মরদেহ বাংলাদেশে পাঠানো সম্ভব হয়েছে।

এছাড়াও মালদ্বীপে নিযুক্ত বাংলাদেশ মিশনের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার মো. সোহেল পারভেজ বলেন, বাংলাদেশ সরকার প্রবাসী বাংলাদেশিদের কল্যাণ নিশ্চিতকল্পে সর্বদায় বদ্ধপরিকর।

সম্পর্কে মৃতের মামাতো ভাই দলোয়ার হোসেন বলেন, আমার ভাই করোনা মহামারির পর থেকে মালদ্বীপের মাফুশি দ্বিপে অবৈধভাবে কাজ করতো। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে দ্রুত তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চারদিন পর সে চিকিৎসারত অবস্থায় মারা যান এবং দশদিন পর বাংলাদেশ বিমানবন্দর থেকে আজ রাত সাড়ে আটটায় তার মরদেহ গ্রহণ করেছি, এইজন্য বাংলাদেশ সরকার ও হাইকমিশনারকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

এ বিষয়ে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের মালদ্বীপের স্টেশন ম্যানেজার জাহিদুল ইসলাম বলেন হাইকমিশনার স্যার গতকাল আমায় জানিয়েছেন বাংলাদেশে মরদেহ পাঠানোর বিষয়টি, সেই পরিপ্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিক ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের কর্তৃপক্ষ ফ্রী বিমান খরচে প্রবাসী সাব্বির মিয়ার মরদেহ বহন করে।

বিনাখরচে প্রবাসী সাব্বির মিয়ার মরদেহ দেশে পাঠাতে বাংলাদেশ সরকার ও হাইকমিশনের এমন ধারাবাহিক প্রচেষ্টা সত্যিই প্রশংসনীয় এবং সংশ্লিষ্ট সবাই প্রশংসার দাবিদার বলে মনে করেন মৃতের সহপাঠী এরশাদ মোল্লা, শাহ্ জালাল শিকদার, ফরহাদ, রহমত উল্লাহ, কামাল হোসেন, আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।

আরও দেখুন:

whatsappচ্যানেল ফলো করুন

প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন news@probashtime.com মেইলে।

Probashir city web post