তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ান যেন সাফ জানিয়ে দিচ্ছেন, সীমান্তে অন্যের আধিপত্য মেনে নেওয়া হবে না। সিরিয়ায় বিদ্রোহীদের সমর্থন দিয়ে বাশার আল-আসাদকে মসনদচ্যুত করার পর এবার এরদোয়ানের দৃষ্টি সিরিয়ার মার্কিন মিত্রদের দিকে। ওয়াশিংটনের কর্মকর্তাদের আশঙ্কা, এরদোয়ানের নির্দেশে যেকোনো সময় সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র বাহিনীর ওপর আক্রমণ হতে পারে।

তুরস্ক ইতিমধ্যেই সিরিয়া-তুরস্ক সীমান্তবর্তী কুর্দি সংখ্যাগরিষ্ঠ শহর কোবানির কাছে সেনা মোতায়েন করেছে। এর আগেও এই শহর তুরস্কের লক্ষ্যবস্তু ছিল। সীমান্তে তুর্কি সেনা সমাবেশ এবং সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের শঙ্কায় যুক্তরাষ্ট্র সতর্ক। তাদের ধারণা, কুর্দি নেতৃত্বাধীন সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেস (এসডিএফ)-এর ওপর বড় ধরনের হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে তুরস্ক ও তাদের মিত্র মিলিশিয়ারা।
২০১৯ সালে সিরিয়ার উত্তরপূর্বাঞ্চলে তুরস্কের চালানো হামলার কথা উল্লেখ করে মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, এবারও একই রকম সেনা সমাবেশ দেখা যাচ্ছে। এক মার্কিন কর্মকর্তা ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে জানিয়েছেন, যেকোনো মুহূর্তে সিরিয়া সীমান্তের ভেতর আক্রমণ শুরু করতে পারে তুরস্ক। এমন পরিস্থিতি এই অঞ্চলের অস্থিতিশীলতা আরও বাড়িয়ে দেবে বলে আশঙ্কা তাদের।
জেরুজালেম পোস্টের প্রতিবেদন অনুসারে, তুরস্কের উর্দি পরা কমান্ডো, আর্টিলারি ইউনিট এবং তাদের মিত্র মিলিশিয়াদের সীমান্তবর্তী কৌশলগত অবস্থানে মোতায়েন করা হয়েছে। কুর্দি বেসামরিক প্রশাসনের সিনিয়র কর্মকর্তা ইলহাম আহমেদ এরই মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে চিঠি দিয়ে এই অভিযান বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন
ইলহাম আহমেদ চিঠিতে উল্লেখ করেন, তুরস্কের এই অভিযান শুরু হলে ২ লাখের বেশি কুর্দি বেসামরিক নাগরিক গৃহহীন হয়ে পড়তে পারেন। তিনি দাবি করেন, তুরস্ক নতুন মার্কিন প্রশাসন দায়িত্ব গ্রহণের আগেই কুর্দি অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিতে চায়, যাতে আঙ্কারার আধিপত্য মেনে নিতে বাধ্য হয় যুক্তরাষ্ট্র।

এসডিএফ মুখপাত্র জানিয়েছেন, গেল সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় একটি যুদ্ধবিরতির আলোচনা হয়েছিল। তবে কোনো চুক্তি ছাড়াই সেই আলোচনা ভেস্তে যায়। বর্তমানে কোবানিতে পূর্ব ও পশ্চিম দিক থেকে তুর্কি বাহিনীর অবস্থান এসডিএফকে চরম চাপের মধ্যে ফেলেছে।
এই পরিস্থিতিতে সিরিয়া ও তার আশপাশের অঞ্চলে নতুন করে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। তুরস্কের এমন পদক্ষেপ শুধু সিরিয়া নয়, পুরো অঞ্চলের স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে।