ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েল বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়লে, যুক্তরাষ্ট্র তার মিত্র সৌদি আরবকে ‘টার্মিনাল হাই অল্টিচিউড এরিয়া ডিফেন্স’ (THAAD) সিস্টেমের কিছু ইন্টারসেপটর ইসরায়েলকে সরবরাহের অনুরোধ জানায়। তবে রিয়াদ সেই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে, জানিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই।
মার্কিন কর্মকর্তারা জানান, যুদ্ধ পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র একাধিক দেশের কাছ থেকে সামরিক সহায়তা চেয়েছে। কোথাও ব্যর্থ হলে বিকল্প পথ খোঁজা হয়েছে। যদিও তারা নির্দিষ্ট করে কোনো দেশের নাম বলেননি, বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সৌদি আরব ছিল এমন একটি শক্তিশালী রাষ্ট্র, যাদের পক্ষে এমন সহায়তা দেওয়া সম্ভব ছিল।
এই ঘটনার কয়েকদিন পর, ৩ জুলাই সৌদি সামরিক বাহিনী তাদের নিজস্ব অর্থায়নে যুক্তরাষ্ট্র থেকে কেনা THAAD ব্যাটারি প্রথমবারের মতো চালু করে। একই সময়ে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সতর্ক করেছিল, ইরানের ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের জন্য সংরক্ষিত ইন্টারসেপটরের মজুদ উদ্বেগজনকভাবে কমে যাচ্ছে। দ্য গার্ডিয়ান জানায়, সংঘাত শেষে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে বৈশ্বিক কৌশলগত প্রয়োজনে ব্যবহারের মতো ‘প্যাট্রিয়ট’ ইন্টারসেপটরের মাত্র ২৫ শতাংশ অবশিষ্ট ছিল।
আরও পড়ুন
ইসরায়েলের তিনস্তরের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা থাকলেও, ইরান একাধিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলি সামরিক স্থাপনায় আঘাত হানাতে সক্ষম হয়। দ্য টেলিগ্রাফ জানায়, অন্তত পাঁচটি সামরিক স্থাপনায় সরাসরি আঘাত হানে ইরান। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পরিস্থিতি যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা সক্ষমতার সীমাবদ্ধতা তুলে ধরেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরান-ইসরাইল সংঘাত মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ দেশগুলোকে নতুন করে তাদের কৌশল নির্ধারণে বাধ্য করেছে। সৌদি আরব এখন ধীরে ধীরে তুরস্কের দিকে ঝুঁকছে এবং প্রয়োজনে ইরানের সঙ্গেও সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের চিন্তা করছে। ইউরেশিয়া গ্রুপের মধ্যপ্রাচ্য প্রধান ফিরাস মাকসাদ মনে করেন, সিরিয়া, লেবানন, গাজা ও পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের লাগাতার হামলা সৌদি নেতৃত্বকে আরও কঠোর অবস্থানে নিয়ে গেছে।
একজন আরব কূটনীতিক মিডল ইস্ট আই-কে বলেন, “এই যুদ্ধ আমাদের দৃষ্টিতে একটি শিক্ষা। ইসরায়েলও বুঝেছে, শক্তিশালী রাষ্ট্রের সঙ্গে সংঘাতের পরিণতি কত ভয়াবহ হতে পারে।”