বিশ্ববিখ্যাত আইরিশ নাট্যকার জর্জ বার্নার্ড শ একবার বলেছিলেন, “খাবারের প্রতি ভালোবাসার মতো আন্তরিক ভালোবাসা আর কিছু নেই।” কথাটি সত্যিই বাস্তব—বিশেষ করে যারা খাদ্যরসিক, তাদের কাছে খাবার শুধু পেট ভরানোর বিষয় নয়, বরং এটি একটি আবেগের নাম। আর এই আবেগকে ঘিরেই গড়ে উঠেছে ফুডভ্লগিং-এর দুনিয়া, যেখানে দেশ-বিদেশের ভিন্নস্বাদের খাবার তুলে ধরা হয় দর্শকদের সামনে।
ফুডভ্লগারদের রিভিউ দেখে অনেকেই খাবারের স্বাদে অভিভূত হন, আবার কেউ কেউ হতাশও হন। তবে শুধুমাত্র স্বাদ নয়, একটি খাবারের পেছনে থাকা ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং উপস্থাপনাও তাকে করে তোলে অনন্য। এই দৃষ্টিকোণ থেকেই বিশ্বের কিছু খাবার স্বাদের পাশাপাশি তাদের গল্পের কারণেও জায়গা করে নিয়েছে খাবারপ্রেমীদের হৃদয়ে।
আরও পড়ুন
ভ্রমণবিষয়ক গাইড ‘টেস্টএটলাস’ এমনই কিছু সেরা খাবারের তালিকা করেছে, যেগুলোর স্বাদ নিতে হলে পাসপোর্ট-ভিসা হাতে নিয়ে দেশান্তরী হতে হয়। এই তালিকার শীর্ষে রয়েছে ইতালির বিখ্যাত পিজ্জা নাপোলিটানা। ১৮শ শতকে নেপলসে উদ্ভব হওয়া এই খাবার এখন ইউনেস্কোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। টমেটো, মোজারেলা আর তুলসীপাতা দিয়ে বানানো এই পিজ্জা আজও স্বাদের দিক দিয়ে অসাধারণ।
এছাড়া রয়েছে জাপানি ‘সুশি’, যা ভাত ও কাঁচা মাছ দিয়ে তৈরি এবং বর্তমানে সারা বিশ্বে জনপ্রিয়। থাইল্যান্ডের রাজকীয় পদ ‘মাসামান কারি’, চীনের ‘পিকিং ডাক’ এবং ফ্রান্সের বিলাসবহুল খাদ্য ‘ফয় গ্রা’—সবগুলোই স্বাদ, ইতিহাস ও দামের দিক থেকে অনন্য। এই খাবারগুলো শুধু পেট নয়, ভ্রমণপিপাসু ও খাদ্যপ্রেমীদের কৌতূহলও মেটায়।
তবে এসব অভিজাত খাবারের স্বাদ পেতে হলে দেশ ভ্রমণ করতে হয় এবং থাকতে হয় প্রস্তুত—চড়া মূল্যের সঙ্গে ইতিহাসের স্বাদ নিতে। আবার অনেক খাবার নিয়েই বিতর্কও রয়েছে, যেমন ফয় গ্রা উৎপাদন পদ্ধতি নিয়ে প্রাণী অধিকার কর্মীদের আপত্তি। তবু ইতিহাস আর ঐতিহ্যের মোড়কে মোড়ানো এসব খাবার বিশ্বজুড়ে খাদ্যসংস্কৃতির অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে।