গাজায় চলমান মানবিক সংকট নিরসনে ব্যর্থ হলে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি। মঙ্গলবার দেশটির পার্লামেন্টের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটির বৈঠকে তিনি জানান, গঠিত ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ (জিএফএইচ) কার্যকরভাবে কাজ করতে পারছে না এবং এতে তার সরকার সন্তুষ্ট নয়।
ল্যামি বলেন, জিএফএইচ-এর মাধ্যমে যথাযথভাবে ত্রাণ পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না। বহু মানুষ এখনো অনাহারে আছে এবং প্রাণহানিও ঘটেছে। তিনি আরও অভিযোগ করেন, জিএফএইচ-এর সহায়তা নিতে গিয়ে অনেক ফিলিস্তিনি ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছেন।
বৈঠকে এক আইনপ্রণেতার প্রশ্নের জবাবে ল্যামি স্পষ্ট করে বলেন, গাজায় মানবিক সংকট এভাবে চলতে থাকলে যুক্তরাজ্য ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত। এর আগেই যুক্তরাজ্য অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, নিউজিল্যান্ড ও নরওয়ের সঙ্গে যৌথভাবে ইসরায়েলি দুই মন্ত্রী ইতামার বেন-গভির ও বেজালেল স্মোটরিচের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
আরও পড়ুন
এছাড়া, গাজা অবরোধের ফলে খাদ্যসংকট শুরু হলে যুক্তরাজ্য ইসরায়েলের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আলোচনা স্থগিত করে এবং কিছু অস্ত্র রপ্তানি বন্ধ রাখে। যদিও মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, এসব পদক্ষেপ এখনো প্রতীকী এবং ইসরায়েলের ওপর কার্যকর চাপ তৈরিতে তা যথেষ্ট নয়।
ল্যামি স্বীকার করেন, পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের অবৈধ বসতি নির্মাণ ও ভূমি দখল আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করছে। তবে যুক্তরাজ্যের চাপ প্রয়োগে ইসরায়েল তার নীতিতে কতটা পরিবর্তন এনেছে, সেই প্রশ্নে তিনি বলেন, অগ্রগতি এখনো ‘অপর্যাপ্ত’।
তিনি আরও বলেন, যুক্তরাজ্য এককভাবে অঞ্চলটির সংকট সমাধান করতে না পারলেও অন্যান্য জি–৭ দেশের তুলনায় তাদের অবস্থান অনেক বেশি বলিষ্ঠ। তিনি জানান, যুক্তরাজ্য ফিলিস্তিনকে একতরফাভাবে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে চায় না—তা যেন বাস্তব শান্তি প্রক্রিয়ায় অবদান রাখতে পারে।
অন্যদিকে, কমিটির চেয়ার এমিলি থর্নবেরি সতর্ক করে বলেন, ইসরায়েলি দখলদারি ও বসতি সম্প্রসারণ চলতে থাকলে হয়তো এমন সময় আসবে, যখন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের সম্ভাবনাটিই হারিয়ে যাবে। তাই এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।