ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ নিয়ে দীর্ঘদিন পর সরাসরি অবস্থান ঘোষণা করল চীন। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, বেইজিং কোনওভাবেই এই যুদ্ধে রাশিয়ার পরাজয় মেনে নেবে না। তিনি বলেন, “আমরা রাশিয়াকে হারতে দিতে পারি না।”
বৃহস্পতিবার বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র বিভাগের প্রধান কাজা কালাসের সঙ্গে চার ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে এই মন্তব্য করেন ওয়াং। বৈঠকে কাজা কালাস চীনের চূড়ান্ত অবস্থান জানতে চাইলে ওয়াং স্পষ্টভাবে রাশিয়ার বিপক্ষে যাওয়া সম্ভব নয় বলে জানান।
ওয়াং ই ব্যাখ্যা করে বলেন, যদি রাশিয়া এই যুদ্ধে হারে, তবে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী কৌশলগত লক্ষ্যবস্তু হবে চীন এবং এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল। সেক্ষেত্রে চীনের নিরাপত্তা ও ভূরাজনৈতিক অবস্থান হুমকির মুখে পড়বে।
আরও পড়ুন
তবে চীন দাবি করছে, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে তারা রাশিয়াকে কোনো সামরিক সহায়তা দেয়নি। ওয়াং বলেন, “যদি আমরা রাশিয়াকে সহায়তা করতাম, তাহলে এ যুদ্ধ এতদিনে শেষ হয়ে যেত।” বৈঠকে আরও আলোচনায় উঠে আসে সাইবার নিরাপত্তা, বিরল খনিজ উপাদান এবং ইইউ-চীন বাণিজ্য সম্পর্ক।
পরদিন শুক্রবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র মাও নিং বলেন, চীনের অবস্থান নৈর্ব্যক্তিক ও শান্তিপূর্ণ। তিনি বলেন, “চীন কূটনৈতিক সংলাপ ও আলোচনার মাধ্যমে সংঘাতের অবসান চায়। দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ কারও জন্যই লাভজনক নয়।”
বিশ্লেষকদের মতে, চীনের এই অবস্থান শুধু রাশিয়ার প্রতি সমর্থন নয়, বরং নিজেদের ভূরাজনৈতিক কৌশল ও নিরাপত্তাকে সামনে রেখে একটি কৌশলী বার্তা। তবে এই অবস্থান ইউরোপ ও পশ্চিমা শক্তিগুলোর সঙ্গে চীনের সম্পর্ককে আরও জটিল করে তুলতে পারে।