ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার চলমান হামলা-পাল্টা হামলার প্রেক্ষাপটে প্রতিবেশী ইরানের সঙ্গে সব সীমান্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে পাকিস্তান। সোমবার (১৬ জুন) দেশটির বেলুচিস্তান প্রদেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বেলুচিস্তানের এক সিনিয়র কর্মকর্তা কাদির বখশ পিরকানি জানিয়েছেন, চাঘি, ওয়াশুক, পানজগুর, কেচ ও গোওয়াদার জেলার সীমান্ত চেকপোস্টগুলোতে কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়েছে। তবে এই সিদ্ধান্ত শুধু যাত্রী চলাচলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, বাণিজ্যিক কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন সীমান্ত চৌকির কর্মকর্তা আত্তা উল মুনিম। একই সঙ্গে ইরানে অবস্থানরত পাকিস্তানি নাগরিকদের দেশে ফেরার সুযোগও রাখা হয়েছে।
তিনি জানান, “আজ প্রায় ২০০ জন পাকিস্তানি শিক্ষার্থীর ফেরার সম্ভাবনা রয়েছে।” এর আগেও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার জানান, ইরান থেকে ৪৫০ জন তীর্থযাত্রীকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে এবং বাকি যাত্রীদেরও ফিরিয়ে আনা হবে। একই রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ইরাকের ক্ষেত্রেও, যেখানে শিয়া মুসলমানদের পবিত্র স্থানগুলো অবস্থিত।
আরও পড়ুন
পাকিস্তান, যেটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ একমাত্র পারমাণবিক শক্তিধর দেশ, শুক্রবার জানিয়েছিল, তারা ইরানের জনগণ ও সরকারের পাশে আছে এবং ইসরায়েলের আক্রমণের নিন্দা জানায়। পাকিস্তান ও ইরান— উভয় দেশই ইসরায়েলকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ সোমবার বলেন, বিশ্ব সম্প্রদায়কে ইসরায়েলের পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত, কারণ তারা আন্তর্জাতিক পারমাণবিক বিধিনিষেধ মানে না। যদিও ইসলামাবাদ আনুষ্ঠানিকভাবে ইরানকে সামরিক সমর্থন দেওয়ার কথা স্বীকার করেনি, আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, সংঘাত বেড়ে গেলে পাকিস্তান তেহরানের পাশে দাঁড়াতে পারে। তবে পাকিস্তান সরকার বলছে, তারা কেবল নৈতিক ও কূটনৈতিক সমর্থন দিচ্ছে।
উল্লেখ্য, শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ ইরান ও সুন্নি সংখ্যাগরিষ্ঠ পাকিস্তানের মধ্যে ৯০০ কিলোমিটারের বেশি দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। সম্পর্ক জটিল হলেও দুই দেশের বার্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় ৩০০ কোটি ডলার, যা আগামীতে ১ হাজার কোটি ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্যে কাজ করছে দুই দেশ। একই সঙ্গে পাকিস্তান যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা ও সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার হিসাবও কৌশলে মেলাতে চেষ্টা করছে।