দেশের চিকিৎসা খাতের সীমাবদ্ধতার কারণে প্রতিবছর উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতে ছুটে যান বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ভারত সরকার ভিসা প্রদান সীমিত করায় বিদেশে চিকিৎসা নেওয়া অনেকের জন্যই কঠিন হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় স্বাস্থ্যখাতকে স্বনির্ভর করতে সক্রিয় ভূমিকা নিতে শুরু করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। চীনের সহায়তায় আন্তর্জাতিকমানের হাসপাতাল নির্মাণের পাশাপাশি এবার তুরস্কও বাংলাদেশে অত্যাধুনিক হাসপাতাল নির্মাণে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
সম্প্রতি তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আমানুল হক এবং সে দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ড. কেমাল মেমিস ওলুর মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই সম্ভাব্য প্রকল্প নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। উল্লেখ্য, তুরস্ক আগেও বাংলাদেশে একটি বিশ্বমানের হাসপাতাল নির্মাণের প্রস্তাব দিয়েছিল। তবে পর্যাপ্ত জমি বরাদ্দ না থাকায় সে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হয়নি। এবার বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ও দূতাবাসের সমন্বিত প্রচেষ্টায় প্রকল্পটি আবারও আলোচনায় এসেছে।
বৈঠকে তুর্কি স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, শিগগিরই একটি কমিটি গঠন করে বিষয়টি নিয়ে তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে বাংলাদেশকে সিদ্ধান্ত জানানো হবে। একই সঙ্গে নির্মিতব্য হাসপাতালে স্থানীয় জনবলকে প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে তোলার আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন
এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে দেশের স্বাস্থ্য খাতে একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এতে একদিকে যেমন উন্নত চিকিৎসা দেশের ভেতরেই পাওয়া যাবে, তেমনি চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার প্রবণতাও হ্রাস পাবে। ফলে চিকিৎসা ব্যয়ও কমবে এবং দেশের মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে।
বিশ্বজুড়ে চিকিৎসা পর্যটনের একটি গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্য হিসেবে পরিচিত তুরস্ক হৃদরোগ, অর্থোপেডিক, কসমেটিক সার্জারি ও ক্যান্সার চিকিৎসায় আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাতি অর্জন করেছে। তাদের এই অভিজ্ঞতা ও প্রযুক্তি বাংলাদেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থায় যুক্ত হলে চিকিৎসা খাতের সক্ষমতা বহুগুণে বাড়বে। সরকারি কর্মকর্তাদের আশা, তুরস্কের এ হাসপাতাল নির্মাণ উদ্যোগ সফল হলে বাংলাদেশেও চিকিৎসা পর্যটনের নতুন দুয়ার খুলবে।