ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে চলমান সংঘর্ষ বন্ধ না করলে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ইসরায়েলকে দেওয়া সমর্থন প্রত্যাহার করা হতে পারে—এমন কড়া বার্তা দিয়েছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহযোগীরা। সোমবার (১৯ মে) ওয়াশিংটন পোস্ট প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে একটি সূত্রের বরাতে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মহল স্পষ্টভাবে ইসরায়েলকে জানিয়ে দিয়েছে—যদি যুদ্ধ অব্যাহত থাকে, তবে তারা ইসরায়েলকে কূটনৈতিকভাবে একা ফেলে দেবে। সূত্রটির দাবি, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর কাছে যুদ্ধ থামানোর ক্ষমতা থাকলেও তিনি তা ব্যবহার করছেন না। এতে স্পষ্ট ইঙ্গিত মিলছে যে, নেতানিয়াহু রাজনৈতিক স্বার্থে যুদ্ধকে টেনে নিচ্ছেন।
ওয়াশিংটন পোস্ট আরও জানায়, ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্য সফরে গেলেও ইসরায়েল সফরসূচিতে রাখেননি, যা নেতানিয়াহুর ওপর চাপ প্রয়োগের কৌশল হিসেবে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি গাজায় মানবিক ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি দিতে ইসরায়েলের ওপর সরাসরি চাপ দিচ্ছে ট্রাম্প শিবির। অতীতে নেতানিয়াহু স্বীকার করেছিলেন, “ক্ষুধার্ত শিশু ও আহত মানুষের ছবি মিত্ররাও আর সহ্য করতে পারছে না”—এই উপলব্ধি থেকেই সীমিত আকারে ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি দেন তিনি।
আরও পড়ুন
তবে একটি সূত্র জানায়, গত রোববার রাতে ইসরায়েলি মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘কৌশলগত পদক্ষেপ’ হিসেবে ব্যাখ্যা দেন, যেন এতে তার রাজনৈতিক দায় না পড়ে। বিশ্লেষকদের মতে, এর মাধ্যমে তিনি নিজের অবস্থান সুরক্ষিত রাখতে চাইছেন।
এদিকে ট্রাম্পের রাজনৈতিক শিবিরের এই মনোভাব এমন সময় প্রকাশ পেল, যখন ওয়াশিংটনের সঙ্গে তেল আবিবের সম্পর্ক ক্রমেই জটিল হয়ে উঠছে। ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠরা মনে করছেন, নেতানিয়াহু এখন যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করছেন এবং এর ফলে ওয়াশিংটনের নীতিগত অবস্থান দুর্বল হয়ে পড়ছে।
এই প্রেক্ষাপটে, যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ সম্প্রতি তাদের নির্ধারিত ইসরায়েল সফর বাতিল বা পিছিয়ে দিয়েছেন। পর্যবেক্ষকরা এটিকে ট্রাম্প শিবিরের অসন্তোষের প্রতিফলন হিসেবেই দেখছেন, যা নেতানিয়াহুর ওপর ক্রমবর্ধমান চাপের একটি বহিঃপ্রকাশ।