দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দেশ ভিয়েতনাম ভ্রমণ ও দীর্ঘমেয়াদি বসবাসে আগ্রহীদের জন্য সুখবর এনেছে। দেশটি শিগগিরই তিন স্তরের একটি নতুন ভিসা প্রোগ্রাম চালুর পরিকল্পনা করছে, যার প্রথম ধাপ হিসেবে থাকবে ‘গোল্ডেন ভিসা’। ভিয়েতনাম ট্যুরিজম অ্যাডভাইজরি বোর্ড সরকারের কাছে এ প্রস্তাব পেশ করেছে বলে জানিয়েছে ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস।
প্রস্তাবিত গোল্ডেন ভিসার মাধ্যমে আগ্রহী বিদেশিরা ৫ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত ভিয়েতনামে বসবাসের সুযোগ পাবেন, যার মেয়াদ পরে আরও বাড়ানোর সুযোগ থাকবে। দ্বিতীয় স্তরে থাকবে ‘ইনভেস্টর ভিসা’, যার মেয়াদ ১০ বছর এবং ৫ বছর পর স্থায়ী আবাসনের আবেদন করার সুযোগ থাকবে। তৃতীয় স্তরে প্রস্তাব করা হয়েছে ‘ট্যালেন্ট ভিসা’, যা নির্দিষ্ট পেশাজীবীদের জন্য ৫ বছর মেয়াদী এবং সহজে নবায়নযোগ্য হবে।
এই তিনটি ভিসার যোগ্যতা ও আবেদন প্রক্রিয়া এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি। তবে জানা গেছে, পুরো প্রক্রিয়াটি ডিজিটাল হবে, ফলে আবেদনকারীদের দূতাবাসে গিয়ে জটিল কাগজপত্র নিয়ে দৌড়ঝাঁপ করতে হবে না। এই উদ্যোগের পেছনে মূল লক্ষ্য হলো—বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা ও দক্ষ পেশাজীবীদের দেশটিতে টেনে আনা।
আরও পড়ুন
ভিয়েতনামের অর্থনীতি বর্তমানে দ্রুত বর্ধনশীল এবং বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এক প্রজন্মের মধ্যেই দেশটি দরিদ্রতা থেকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। দেশটির লক্ষ্য ২০৪৫ সালের মধ্যে উচ্চ আয়ের দেশের মর্যাদা অর্জন করা। প্রস্তাবিত ভিসা প্রোগ্রামটি প্রথমে পরীক্ষামূলকভাবে ফু কুয়ক, হো চি মিন সিটি, হ্যানয় এবং দা নাং—এই শহরগুলোতে চালুর সুপারিশ করা হয়েছে, যেগুলো প্রতিবছর লাখো পর্যটক আকর্ষণ করে।
এই নতুন ভিসা উদ্যোগটি ভিয়েতনামের পর্যটন শিল্পকে আরও বিস্তৃত করার কৌশলের অংশ। ২০২৫ সালের মধ্যে ২ কোটি ৩০ লাখ বিদেশি পর্যটক টানার লক্ষ্য নিয়েছে দেশটি। ২০২৪ সালে ইতিমধ্যেই ১ কোটি ৭৬ লাখ পর্যটক ভিয়েতনাম ভ্রমণ করেছেন। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ার মতো দেশগুলোতেও দীর্ঘমেয়াদি ভিসা জনপ্রিয় হয়ে উঠছে, যেখানে ইউরোপে এ ধরনের প্রোগ্রামগুলো ধীরে ধীরে বাতিল হচ্ছে।