ভারত অধিকৃত কাশ্মীর সীমান্তে গভীর রাতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনা ঘটেছে। পাকিস্তানের দাবি অনুযায়ী, এই হামলায় দেশটির আজাদ কাশ্মীরসহ মোট নয়টি স্থানে আঘাত হানে ভারতীয় বাহিনী। বুধবার (৭ মে) পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যানুসারে, এই হামলায় আটজন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং ৩৫ জন আহত হয়েছেন। পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী এই হামলাকে ‘স্পষ্ট আগ্রাসন’ হিসেবে উল্লেখ করেছে।
পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর)-এর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আহমেদ শরীফ এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, ভারতীয় বাহিনী কোটলিতে মসজিদ-ই-আব্বাস নামক একটি মসজিদকে লক্ষ্যবস্তু করে হামলা চালায়। এই হামলায় ১৬ বছর বয়সী এক কিশোরী ও ১৮ বছর বয়সী এক যুবক নিহত হয়েছেন। এছাড়াও, কোটলিতে অপর এক হামলায় একজন নারী ও তার মেয়ে আহত হয়েছেন। আইএসপিআর মহাপরিচালক আরও জানান, মুরিদকেতেও একটি মসজিদে হামলা চালানো হয়েছে, যেখানে একজন নিহত ও একজন আহত হয়েছেন। শহরটিতে মোট চারটি হামলার ঘটনা ঘটেছে এবং এতে একজন বেসামরিক নাগরিক নিহত ও একজন আহত হওয়ার পাশাপাশি দুইজন নিখোঁজ রয়েছেন। হামলায় একটি আবাসিক ভবনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে তিনি জানান।
জেনারেল শরীফ আরও উল্লেখ করেন, ভারতীয় বাহিনী শুধু মসজিদ নয়, স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রসহ বেসামরিক এলাকাগুলোতেও হামলা চালিয়েছে। শকরগড়ে দুটি ভারতীয় হামলায় একটি স্থানীয় চিকিৎসালয় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। অন্যদিকে, শিয়ালকোটে কোটলি লোহারান গ্রামে একটি গোলা পতিত হলেও কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। এছাড়া, শিয়ালকোটে পতিত অন্য একটি গোলা বিস্ফোরিত হয়নি এবং আরেকটি জনবসতিহীন স্থানে বিস্ফোরিত হয়েছে বলে তিনি জানান।
আরও পড়ুন
তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারারের সাথে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে মেজর জেনারেল আহমেদ শরীফ এই হামলাগুলোকে বেসামরিক অবকাঠামোর বিরুদ্ধে ‘স্পষ্ট আগ্রাসন’ হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি জানান, প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী দুইজন বেসামরিক নাগরিক নিখোঁজ রয়েছেন এবং ভারতীয় বাহিনী পাকিস্তানের ছয়টি স্থানে ২৪টি হামলা চালিয়েছে। পাকিস্তান সরকার এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের সদস্যদের দিনের বেলায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনের জন্য নিয়ে যাওয়া হবে, যাতে তারা ‘ভারতের স্পষ্ট আগ্রাসন’ স্বচক্ষে দেখতে পারেন। এই ঘটনায় ভারত সরকারের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে, এই হামলার ঘটনা প্রতিবেশী দুটি দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।