গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ মন্তব্য করেছেন যে ভারতের গণমাধ্যম বর্তমানে ‘গোদিমিডিয়া’ নামে পরিচিতি লাভ করেছে। বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে রোববার ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) কার্যালয়ে আয়োজিত এক বিশেষ আলোচনা সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।
কামাল আহমেদ বলেন, বিগত সরকার আমলে টেলিভিশন চ্যানেলের লাইসেন্স সাংবাদিকতার দক্ষতার পরিবর্তে রাজনৈতিক আনুগত্যের ভিত্তিতে দেওয়া হয়েছিল। ‘এক মালিক এক মিডিয়া’ প্রস্তাবের বিরোধিতাকারীরা ভারতের উদাহরণ টানলেও, বিশ্ব গণমাধ্যম সূচকে দেশটির অবস্থান বাংলাদেশের চেয়েও খারাপ এবং সেখানকার গণমাধ্যম এখন ‘গোদিমিডিয়া’ হিসেবে পরিচিত।
আরও পড়ুন
সংবাদ মাধ্যমকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তরের প্রস্তাব বাস্তবায়নযোগ্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনেকে এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করলেও জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজের তথ্য অনুযায়ী প্রায় দেড় ডজনের বেশি সংবাদ মাধ্যম লাভজনক। তাই কমিশন মনে করে এই প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা সম্ভব।
সাংবাদিকদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা না গেলে গণমাধ্যম কর্মীদের অসৎ উপায়ে অর্থ উপার্জন বন্ধ করা যাবে না বলে মন্তব্য করেন কামাল আহমেদ। তিনি বলেন, নবম গ্রেডে বেতন দেওয়া সম্ভব নয় এমন যুক্তিকারীরা মূলত সাংবাদিকদের ন্যায্য বেতন না দিয়ে সরকারি বিজ্ঞাপনের সুবিধা নিতে আগ্রহী। ২০১৪ সালে ঘোষিত অষ্টম ওয়েজ বোর্ড যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হলে একজন প্রতিবেদক বা সহ-সম্পাদকের বেতন এতদিনে নবম গ্রেডের সরকারি কর্মচারীর সমতুল্য হতো। কামাল আহমেদ সামাজিক মাধ্যমে সাংবাদিকদের হুমকি ও হয়রানির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে গণমাধ্যমকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি জানান, স্থায়ী গণমাধ্যম কমিশন ও সাংবাদিক সুরক্ষা আইন প্রণয়নের সুপারিশ করা হয়েছে এবং এগুলোর খসড়াও তৈরি করে জমা দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর সরকার পদক্ষেপের প্রতিশ্রুতি দিলেও এখন পর্যন্ত তেমন অগ্রগতি দেখা যায়নি।