আকাশপথে ধেয়ে আসা যেকোনো ধরনের হুমকি প্রতিরোধের জন্য ভারতীয় সেনাবাহিনীর ‘ম্যান পোর্টেবল এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম’-এর ঘাটতি রয়েছে। এই ঘাটতি পূরণের লক্ষ্যে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্প্রতি একটি দরপত্র আহ্বান করেছে। এর মাধ্যমে কাঁধে বহনযোগ্য দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ক্ষেপণাস্ত্র কেনার পরিকল্পনা করা হয়েছে, যা শত্রুপক্ষের যুদ্ধবিমান বা ড্রোনকে দ্রুত ও নির্ভুলভাবে ধ্বংস করতে সক্ষম।
এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ছয় কিলোমিটার পর্যন্ত দূরত্বে থাকা ড্রোন বা যুদ্ধবিমানকে প্রতিহত বা ধ্বংস করতে পারবে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর অস্ত্রাগারের জন্য ৪৮টি লঞ্চার, ৪৮টি নাইট ভিশন ডিভাইস, ৮৫টি ক্ষেপণাস্ত্র এবং স্বল্পপাল্লার বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পরীক্ষার জন্য একটি কেন্দ্র স্থাপনের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। আগ্রহী সংস্থাগুলোকে আগামী ২০শে মে’র মধ্যে তাদের প্রস্তাব জমা দিতে বলা হয়েছে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আকাশপথে আসা যেকোনো হুমকি মোকাবিলায় ভারতীয় সেনাবাহিনীর ‘ম্যান পোর্টেবল সিস্টেম’-এর অভাব রয়েছে। এই অভাব পূরণের জন্যই এই দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, নতুন ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ ব্যবস্থা বা এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমে অবশ্যই ‘অ্যান্টি-জ্যামিং’ বৈশিষ্ট্য থাকতে হবে। এর অর্থ হলো, নেটওয়ার্ক বা ইন্টারনেট পরিষেবা সীমিত থাকলেও এই ব্যবস্থা কার্যকর থাকতে পারবে।
আরও পড়ুন
শুধু তাই নয়, এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থাকে সব ধরনের আবহাওয়ার পরিস্থিতি মোকাবিলার উপযোগী হতে হবে। সমতল, মরুভূমি বা সাড়ে চার হাজার মিটার উঁচু যেকোনো স্থান থেকে এটি ব্যবহার করা সম্ভব হতে হবে। এর আগে, পূর্ব লাদাখে চীনের সঙ্গে সামরিক সংঘাতের সময় ভারতীয় সেনাবাহিনী এই ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছিল। এছাড়াও, গত বছর রাশিয়া ভারতকে ‘ইগলা এস’ নামে স্বল্পপাল্লার বিমানবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করেছিল।
২০২৩ সালের শেষদিকে ভারত ও রাশিয়া একটি অস্ত্র চুক্তি করে, যার আওতায় ভারত ‘ইগলা-এস’ ক্ষেপণাস্ত্র পায়। প্রথম দফায় ২৪টি ‘ইগলা-এস’ লঞ্চার এবং ১০০টি ক্ষেপণাস্ত্র ভারতীয় সেনাবাহিনীতে এসে পৌঁছেছে। এবার ভারতীয় সেনাবাহিনী আরও একই ধরনের স্বল্পপাল্লার বিমানবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র কিনতে আগ্রহী। সাম্প্রতিক পেহেলগাম কাণ্ডের পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ায় ভারত তার সামরিক সক্ষমতা জোরদার করতে চাইছে বলে মনে করা হচ্ছে।