বাংলাদেশ ও আজারবাইজানের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে দুই দেশের নাগরিকদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করার বিষয়ে আলোচনা করেছে উভয় পক্ষ। একইসঙ্গে, দুই দেশে একে অপরের মিশন চালুর বিষয়ে দ্রুত আলোচনা হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন ঢাকা সফররত আজারবাইজানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী এলনুর মামাদভ।
মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এসব কথা বলেন আজারবাইজানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
কানেক্টিভিটি অর্থাৎ ভিসা এবং দুই দেশের মধ্যে সরাসরি বিমান পরিষেবা চালুর বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এলনুর মামাদভ বলেন, এটি তাদের আলোচনার অন্যতম বিষয় ছিল। তারা কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নোট করেছেন, যার মধ্যে ভিসা সহজীকরণের বিষয়টি অন্যতম।
আরও পড়ুন
ঢাকায় আজারবাইজানের মিশন চালু প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আজারবাইজানে বাংলাদেশের কোনো কূটনৈতিক উপস্থিতি নেই; আঙ্কারা মিশন থেকে দেশটি দেখা হয়। একই পরিস্থিতি আজারবাইজানের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য, বাংলাদেশে তাদের কোনো মিশন নেই। মিশন চালুর বিষয়ে দ্রুত আলোচনা শুরু হতে পারে। উভয় প্রান্তে সুযোগ অনুসন্ধানের জন্য কূটনৈতিক উপস্থিতি অপরিহার্য। যেহেতু এখনও কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি, তাই তিনি মনে করেন এটি আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে।
কাশ্মীর ইস্যুকে কেন্দ্র করে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা মধ্য এশিয়াকে প্রভাবিত করবে কিনা, এমন প্রশ্নের উত্তরে আজারবাইজানের মন্ত্রী বলেন, তিনি মূলত বাংলাদেশ ও আজারবাইজানের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করতে এসেছেন এবং এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চান না।
২৭ এপ্রিল দিবাগত রাতে একটি প্রতিনিধিদল নিয়ে ঢাকায় আসেন আজারবাইজানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সোমবার, ২৮ এপ্রিল আজারবাইজানের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা)-এর নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক করেন। মঙ্গলবার দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বাংলাদেশ ও আজারবাইজানের মধ্যে পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের আলোচনা, ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিন এবং আজারবাইজানের পক্ষে এলনুর মামাদভ।
এলনুর মামাদভ বলেন, তার এই সফরের মূল উদ্দেশ্য হলো একটি বন্ধুত্বপূর্ণ দেশ হিসেবে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর করার সুযোগ সন্ধান করা। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস কপ-২৯ সম্মেলনে যোগ দিতে আজারবাইজান সফর করেছিলেন। সেই সময় দুই দেশের শীর্ষ নেতারা দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হন এবং দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করার বিষয়ে একমত পোষণ করেন। তারই ধারাবাহিকতায় তার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে এসেছে, যাতে বাংলাদেশে বিনিয়োগের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা যায়।
আজারবাইজানের মন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমাদের বাণিজ্য, শিক্ষা ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রে একসঙ্গে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। আমাদের মধ্যে বেশ কিছু সমঝোতা স্মারকের প্রস্তাবনাও রয়েছে।’