কুমিল্লার তিতাস উপজেলার সাগরফেনা গ্রামে সাপের কামড়ে মৃত্যু হয়েছে সদ্য দেশে ফেরা প্রবাসী নাছির উদ্দীনের। শনিবার দুপুরে নিজ বাড়িতে বিষধর সাপের কামড়ের শিকার হন তিনি। তবে, প্রাথমিকভাবে তাকে হাসপাতালে না নিয়ে স্থানীয় ওঝার কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। স্ত্রী হাসপাতালে নেওয়ার জন্য বারবার অনুরোধ করলেও পরিবারের সদস্যরা তার কথা শোনেননি। অবস্থার অবনতি হলে শেষপর্যন্ত স্ত্রী ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশের সহায়তায় স্বামীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল।
তিতাস উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. মোস্তফা জামান আশিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া একটি পোস্টে এ ঘটনার বর্ণনা দিয়ে গভীর হতাশা প্রকাশ করেন। তিনি জানান, শনিবার সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটে এক ব্যক্তি সাপে কাটা অবস্থায় হাসপাতালে আসেন। রোগীর উপসর্গ দেখে তিনি নিশ্চিত হন, এটি ছিল বিষধর সাপের কামড় এবং বিষ ইতোমধ্যেই স্নায়ুতন্ত্রে প্রভাব ফেলেছে।
চিকিৎসক জানান, রোগীর স্ত্রী জানান দুপুর ২টায় সাপে কাটে। এরপর দীর্ঘ সময় ধরে তাকে স্থানীয় ওঝার কাছে নেওয়া হয়, যেখানে তার শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হতে থাকে। রোগী তখন ঘাড় তুলতে পারছিলেন না, বমি করছিলেন। স্ত্রী বহুবার হাসপাতালে নিয়ে যেতে বললেও, পরিবারের ‘মুরুব্বিরা’ রাজি হননি।
আরও পড়ুন
পরিস্থিতি বেগতিক দেখে স্ত্রী বাধ্য হয়ে ৯৯৯-এ ফোন করেন এবং পুলিশের সহায়তায় হাসপাতালে পৌঁছান। চিকিৎসক আশিক জানান, চিকিৎসা শুরুর আগেই রোগী কোমায় চলে যান এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই মৃত্যুবরণ করেন।
এই ঘটনায় আবেগঘন পোস্টে চিকিৎসক লিখেছেন, “এটা কেবল মৃত্যু নয়, এটা হত্যা। অন্ধ বিশ্বাস, কুসংস্কার আর কিছু গোঁয়ার্তুমি মানুষের কারণে একটি প্রাণ হারাল।” তিনি আরও বলেন, প্রতিটি উপজেলা হাসপাতালে এন্টিভেনম রয়েছে, তবুও মানুষ ওঝার কাছে ছুটে গিয়ে নিজেদের জীবন বিপন্ন করছে। সাপে কাটার পর দ্রুত হাসপাতালে না এলে জীবন বাঁচানো কঠিন হয়ে পড়ে।