আধুনিক যুদ্ধ কৌশলে নতুন মাত্রা যোগ করতে জার্মানি উদ্ভাবন করেছে ‘সাইবার তেলাপোকা’। এই অভিনব প্রযুক্তির মাধ্যমে যুদ্ধক্ষেত্রে নজরদারি এবং শত্রুর গতিবিধি সম্পর্কে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করা হবে। জীবিত তেলাপোকার দেহের সঙ্গে কৃত্রিম যন্ত্রাংশ যুক্ত করে তৈরি এই রোবোটিক পোকামাকড় সেনাদের জন্য বিপজ্জনক এলাকায় প্রয়োজনীয় তথ্য পাঠাতে পারবে।
সাইবার তেলাপোকাগুলোর পিঠে সংযুক্ত করা হয়েছে অতি ক্ষুদ্র ক্যামেরা ও উন্নত সেন্সর। বৈদ্যুতিক সংকেতের মাধ্যমে দূর থেকে এগুলো নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। একই সঙ্গে, এগুলো একত্রে ঝাঁক বেঁধে কাজ করতে সক্ষম, যা সংঘবদ্ধ নজরদারিতে বিশেষ কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
আরও পড়ুন
উদ্ভাবনী এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে জার্মানির প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ‘সোয়ার্ম বায়োট্যাকটিক্স’। কোম্পানির প্রধান স্টেফান উইলহেলম জানিয়েছেন, তাদের তৈরি বায়ো-রোবটগুলো জীবন্ত তেলাপোকার ওপর ভিত্তি করে নির্মিত এবং এগুলোতে আধুনিক সেন্সর ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সংযুক্ত রয়েছে। প্রয়োজন অনুযায়ী এগুলো স্বাধীনভাবে অথবা দলবদ্ধভাবে কাজ করতে পারে।
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে জার্মানি প্রতিরক্ষা খাতে বিনিয়োগ বাড়িয়েছে এবং স্মার্ট প্রযুক্তিনির্ভর সমাধানের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ভবিষ্যতের যুদ্ধ হবে ছোট, স্বয়ংক্রিয় এবং বুদ্ধিমান যন্ত্রের মধ্যে—যেখানে সাইবার তেলাপোকার মতো প্রযুক্তি বড় ভূমিকা রাখবে।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, এই ধরনের প্রযুক্তি শুধু যুদ্ধক্ষেত্রেই নয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং নগর নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণেও ব্যবহার করা সম্ভব। তীব্র বিপদসংকুল এলাকায় সশরীরে উপস্থিত না হয়েও এই পোকাগুলো দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করা যাবে।
বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে প্রতিরক্ষা নীতিতে বড় পরিবর্তন এনেছে জার্মানি। আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর, বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন ও ক্ষুদ্রাকৃতির সরঞ্জাম ব্যবহারের দিকে ঝুঁকে পড়েছে দেশটি। এই পরিবর্তন প্রতিরক্ষা খাতে এক নতুন যুগের সূচনা বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।