ইউরোপে অনিয়মিত অভিবাসনের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ও ব্যস্ত পথ হিসেবে আবারও সামনে এসেছে সেন্ট্রাল মেডিটেরেনিয়ান রুট। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সীমান্ত পর্যবেক্ষণ সংস্থা ফ্রন্টেক্সের চলতি বছরের (২০২৫) প্রথম ছয় মাসের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, এই পথে অভিবাসন প্রবণতা বেড়েছে ১২ শতাংশ, যেখানে বাংলাদেশি নাগরিকরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। বিশেষ করে লিবিয়া থেকে ইতালিতে অবৈধভাবে প্রবেশকারীদের মধ্যে বাংলাদেশির সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, যা পূর্ব বছরের তুলনায় ৮০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
ফ্রন্টেক্সের তথ্য অনুযায়ী, শুধু এই রুটেই ২৯ হাজার ৩০০ অভিবাসী প্রবেশ করেছেন, যার মধ্যে ২০ হাজার ৮০০ জনই লিবিয়া হয়ে ইতালিতে গেছেন। বাংলাদেশের পর মিশর ও আফগানিস্তানের নাগরিকদের উপস্থিতি লক্ষণীয়। অনেকেই এই ভয়ংকর যাত্রায় প্রাণ হারাচ্ছেন, আবার অনেকে পাচারকারী চক্রের খপ্পরে পড়ে মানবেতর পরিস্থিতিতে পড়ছেন।
অন্যদিকে, ইউরোপে সামগ্রিক অনিয়মিত অভিবাসনের হার কমলেও সেন্ট্রাল মেডিটেরেনিয়ান রুটে চাপ বাড়ছে। চলতি বছর ইউরোপে অনিয়মিত অভিবাসনের সংখ্যা ২০ শতাংশ কমে ৭৫ হাজার ৯০০ জনে দাঁড়ালেও এই রুটটি হয়ে এসেছে ৩৯ শতাংশ প্রবেশ। পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় ও পশ্চিম আফ্রিকার রুটে প্রবাহ হ্রাস পেলেও, নতুন করে লিবিয়া থেকে গ্রিসের ক্রিট দ্বীপমুখী একটি করিডোর তৈরি হওয়ায় পাচারকারীরা নজরদারি এড়িয়ে এই পথ বেছে নিচ্ছে।
আরও পড়ুন
এছাড়া, পশ্চিম ভূমধ্যসাগরীয় রুটে ১৯ শতাংশ এবং ইংলিশ চ্যানেল হয়ে যুক্তরাজ্যে প্রবেশের চেষ্টাও ২৩ শতাংশ বেড়েছে। জুন মাসেই আলজেরিয়া থেকে প্রবেশ দ্বিগুণ হয়েছে, যা নতুন উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফ্রান্স হয়ে যুক্তরাজ্যে প্রবেশের জন্য ৩৩ হাজার ২০০ জন চেষ্টা করেছেন বলে জানায় ফ্রন্টেক্স।
প্রতিবেদনটি আরও জানায়, চলতি বছরের প্রথমার্ধে ভূমধ্যসাগরে অনিয়মিত অভিবাসী হিসেবে যাত্রাকালে অন্তত ৭৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে বাংলাদেশিও রয়েছেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন নিরাপত্তা জোরদারে ফ্রন্টেক্সের মাধ্যমে তিন হাজারের বেশি কর্মকর্তা মোতায়েন করলেও পাচারকারীদের কৌশল বদলানোয় সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।