ইউক্রেনের ভূখণ্ড থেকে রপ্তানি করা ‘চুরি হওয়া’ গম বাংলাদেশি কোম্পানিগুলো আমদানি করেছে—এমন অভিযোগ তুলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জানিয়েছে কিয়েভ। এসব গম রাশিয়া অধিকৃত অঞ্চল থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে বলে দাবি করছে ইউক্রেন, এবং তারা চাইছে সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হোক।
ভারতে নিযুক্ত ইউক্রেনীয় রাষ্ট্রদূত ওলেক্সান্ডার পোলিশকুক জানিয়েছেন, বাংলাদেশকে একাধিকবার চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানানো হলেও কোনো উত্তর না পাওয়ায় ইউক্রেন এখন ইইউর সহায়তা নিচ্ছে। রাষ্ট্রদূতের ভাষ্য অনুযায়ী, ইউক্রেনীয় গোয়েন্দা সূত্র থেকে তারা নিশ্চিত হয়েছেন যে রুশ কোম্পানিগুলো ইউক্রেনের দখলকৃত এলাকা থেকে গম সংগ্রহ করে সেগুলো রাশিয়ার অন্যান্য গমের সঙ্গে মিশিয়ে রপ্তানি করছে।
ইউক্রেনের অভিযোগ, এসব গম রাশিয়ার কাভকাজ বন্দরের মাধ্যমে বাংলাদেশে এসেছে। ২০২৪ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত এসব চালানের সময়সূচি এবং সংশ্লিষ্ট জাহাজের রেজিস্ট্রেশন নম্বর পর্যন্ত জানানো হয়েছে কিয়েভ থেকে। এমনকি ইউক্রেন গত ১১ জুন এক চিঠিতে বাংলাদেশকে কঠোর পরিণতির হুঁশিয়ারিও দিয়েছে।
আরও পড়ুন
অন্যদিকে রাশিয়া ইউক্রেনের অভিযোগকে প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, এসব গম তাদের বর্তমান ভূখণ্ডে উৎপাদিত এবং তা বৈধভাবেই রপ্তানি হয়েছে। রাশিয়ার মতে, ইউক্রেনের যেসব অঞ্চল তারা বর্তমানে দখলে রেখেছে, সেগুলো এখন রাশিয়ার অংশ এবং সেগুলো ‘চুরি’ নয়।
বাংলাদেশ সরকার এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেছেন, বাংলাদেশ কখনোই ‘চুরি করা’ গম আমদানি করেনি এবং রাশিয়ার গম কেনার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার বিষয়েও সতর্কতা অবলম্বন করা হয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রবিষয়ক মুখপাত্র এনিটা হিপারও জানিয়েছেন, ইউক্রেন যে জাহাজগুলোর তথ্য দিয়েছে সেগুলোর ওপর বর্তমানে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই।
তবে এ ঘটনা বাংলাদেশ ও ইউক্রেনের মধ্যকার এক অঘোষিত কূটনৈতিক উত্তেজনার ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিষয়টি এখন আন্তর্জাতিক মহলের নজরেও এসেছে।