২০০ জনেরও বেশি যাত্রী নিয়ে প্রায় দশ মিনিট ধরে কোনো পাইলট ছাড়াই আকাশে উড়ল একটি বিমান। জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট থেকে স্পেনের সেভিলের উদ্দেশ্যে যাত্রা করা এ৩২১ মডেলের একটি এয়ারবাসে এই ঘটনা ঘটেছে। গত বৃহস্পতিবার এক স্প্যানিশ তদন্ত সংস্থার প্রতিবেদনে উঠে আসে এ ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ।
বিমানটির ককপিটে পাইলটের সাথে ছিলেন ৩৮ বছর বয়সী মাত্র একজন ফার্স্ট অফিসার। ফ্লাইট চলাকালীন সময়ে একপর্যায়ে ক্যাপ্টেন বাথরুমে যান। সে সময় ফার্স্ট অফিসার হঠাৎ অসুস্থ হয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। অর্থাৎ, তখন ককপিটে আসলে কেউ সক্রিয় ছিলেন না।
স্প্যানিশ তদন্ত সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়, ফ্লাইটটি স্প্যানিশ সীমান্তে প্রবেশের আগে পর্যন্ত সবকিছু স্বাভাবিক ছিল। যাত্রা শেষের প্রায় আধ ঘণ্টা বাকি থাকতেই ক্যাপ্টেন টয়লেটে যান। পাইলটের ভাষ্য অনুযায়ী, সে সময় তিনি ফার্স্ট অফিসারকে সম্পূর্ণ সুস্থ দেখেছিলেন। কিন্তু ৮ মিনিট পর যখন ক্যাপ্টেন বাথরুম থেকে ফিরে আসেন, তখন ককপিটের দরজা খুলছিল না। পাঁচবার কোড দিয়ে চেষ্টা করেও দরজা খুলতে পারেননি তিনি। একজন ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টও এসময় ইন্টারকমে যোগাযোগের চেষ্টা করেন, কিন্তু ককপিট থেকে কোনো সাড়া মেলেনি।
আরও পড়ুন
শেষমেশ ক্যাপ্টেন জরুরি কোড ব্যবহার করে দরজা খোলার চেষ্টা করেন। এর আগেই ফার্স্ট অফিসার কিছুটা সুস্থ হয়ে দরজা খুলে দেন। তখন সেই ফার্স্ট অফিসারের মুখ ছিল ফ্যাকাশে, শরীর ছিল ঘামে ভেজা, এবং তার আচরণে অস্বাভাবিকতা দেখা যায়। ক্যাপ্টেন তখন বিমানের দিক ঘুরিয়ে মাদ্রিদে জরুরি অবতরণ করেন। অবতরণের পর, অসুস্থ ফার্স্ট অফিসারকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা জানান, তার আচমকা অসুস্থতার পেছনে কাজ করেছে একধরনের স্নায়বিক সমস্যা। এই ঘটনা সামনে আসার পর স্পেনের বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ইউরোপীয় ইউনিয়নের এভিয়েশন সেফটি এজেন্সিকে সুপারিশ করেছে যেন ভবিষ্যতে কোনো বিমানেই ফ্লাইট ডেকে একজন পাইলটকে একা রাখা না হয়।