৭-৮ মাস আগে পৃথিবী ছেড়ে গেছে, কেউ জানেইনি… পাকিস্তানি মডেল হুমায়রা আসগারের মর্মান্তিক বিদায়! একজন মানুষ—যিনি মডেল ছিলেন, আলো ঝলমলে দুনিয়ার অংশ ছিলেন, তার জীবনের শেষটা এমন নিঃসঙ্গ আর ভয়াবহ হবে, কে ভাবতে পারে?
সম্প্রতি পাকিস্তানের পুলিশ একটি ফ্ল্যাট থেকে তার ম-ৃ-ত দেহ উদ্ধার করে। কিন্তু চাঞ্চল্যকর বিষয় হলো—তিনি সম্ভবত ৭–৮ মাস আগেই মারা গেছেন! এতদিনে তার খোঁজ কেউ নেয়নি! পুলিশ জানিয়েছে, তার সর্বশেষ ফেসবুক পোস্ট ছিল ২০২৪ সালে। বাসার ভাড়া বাকি ৮ মাসের! খাবারের সব মেয়াদ ফুরিয়ে গেছে আগেই। ফ্ল্যাটের ভেতরে ধীরে ধীরে পচে যায় তার দেহ।
আরও পড়ুন
পুলিশ জানায়, হুমায়রা পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে একাই থাকতেন। ফ্যামিলির সাথে সম্পর্ক ভালো ছিল না, তাই হয়তো তারা খোঁজ নেয়নি।
কিন্তু প্রশ্ন হলো—
👉 কোনো বন্ধু ছিল না?
👉 কোনো সহকর্মী, প্রতিবেশী বা পরিচিত কেউও একবার খোঁজ নেয়নি?
👉 এতগুলো মাস কেউ ভাবেনি, “আচ্ছা, হুমায়রা কোথায়?”
একজন মানুষ কতটা একা হলে—মারা যাওয়ার ৭-৮ মাস পরেও কেউ জানতে পারল না, শুনতে চাইল না, দেখতে এল না?
এটা শুধু মৃত্যু নয়, একটি জীবন্ত মানুষের নিঃশব্দ বিলীন হয়ে যাওয়ার করুণ দলিল। একটা মানুষ কেবল মৃত্যুর জন্য নয়, অজ্ঞাত থাকার জন্যও যেন বিলীন হয়ে যায়— এমন নিষ্ঠুরতা যেন আর কারো জীবনে না আসে।
তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে স্থানীয় প্রশাসন। রিপোর্টে বলা হয়েছে, হুমাইরার অস্থিমজ্জা সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। মস্তিষ্ক পচে গেছে, দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কালো হয়ে গেছে। আঙুল ও নখের কোনও চিহ্ন নেই, মাংস গলে বেরিয়ে এসেছে হাড়। মেরুদণ্ডের হাড় থাকলেও সুষুম্না নাড়ির অস্তিত্ব নেই। হাড়ের উপর কালো চামড়ার স্তর ছাড়া আর কিছু অবশিষ্ট নেই। শরীরে বাদামি পোকা জন্মেছে বলেও উল্লেখ রয়েছে রিপোর্টে।
শুরুর দিকে অভিনেত্রীর পরিবারের কেউ মরদেহ নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল। তাদের দাবি ছিল, অভিনয় করে নাকি বংশের মানসম্মান নষ্ট করেছিলেন হুমাইরা। যে কারণে তার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই কোনো যোগাযোগ ছিল না পরিবারের।
যদিও শুক্রবার অভিনেত্রীর মরদেহ গ্রহণের পর দাফন করেছে পরিবার।
এদিকে তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মৃতদেহে বাইরে থেকে কোনও আঘাতের চিহ্ন মেলেনি। কোনও হাড়ও ভাঙা নেই। মৃত্যুর সঠিক কারণ এখনো জানা যায়নি। ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্ট আসার পরই পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে পুলিশ।