বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার গণবিক্ষোভের মুখে পতন হয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের। এর প্রভাব পড়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকেও। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ কমে যাওয়া এবং এর পেছনে রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রভাব স্পষ্ট, এই মুহূর্তে প্রশ্ন হচ্ছে— বিদায় কালে কি পরিমান রিজার্ভ রেখে গেছে আওয়ামী লীগ সরকার?
চলতি মাসের শুরুতে আইএমএফের হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশ ব্যাংকের মোট রিজার্ভ ২০.৪৮ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে। তবে একদিনের অস্থিরতায় রিজার্ভ আরো কমেছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কয়েকজন কর্মকর্তা।
তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা দাবি করছেন, বর্তমানে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভের পরিমাণ ১৫ বিলিয়ন ডলারের নিচে।
এর আগে, সরকার পতনের পর দেশে যে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দিয়েছে, তা বিনিয়োগকারীদের আস্থা হারিয়েছে। ফলে বিদেশি মুদ্রার প্রবাহ কমে গেছে। সাথে আবার প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের পরিমাণ কমে যাওয়াও রিজার্ভ কমে যাওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ।
আরও পড়ুন
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হকের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, রিজার্ভের ব্যাপারে এ মুহূর্তে কিছু জানানো সম্ভব না। আপাতত রিজার্ভ নিয়ে কোনো তথ্য দেওয়া ঝুঁকিপূর্ণ।
তবে, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্রাটেজিক স্ট্রাডিজের (বিআইআইএসএস) গবেষণা পরিচালক মাহফুজ কবির বলেন, এত বড় অর্থনীতির জন্য এই পরিমাণ রিজার্ভ অপ্রতুল।
এদিকে, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গেলো ৭ আগস্ট থেকে ব্যাপক আন্দোলনের মুখে চার ডেপুটি গভর্নর, বিএফআইইউ প্রধান ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাংকিং উপদেষ্টা পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। পরবর্তীতে শুক্রবার পদত্যাগ করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।
এদিকে, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ কমে যাওয়া দেশের অর্থনীতির জন্য একটি গুরুতর হুমকি। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য সরকারকে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা, বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনা এবং রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ানোর জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি।